সাপুরের আড়ালে দুরারোগ্যব্যধি সারানোর কথা বলে নিরীহদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া আর নারী নির্যাতনসহ প্রতারণা মামলার আসামি মো. আলী নারায়ণগঞ্জ জেলাকারাগার থেকে বেরিয়ে ফের বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। এর আগে ভুক্তভোগীদের মামলার পর রূপগঞ্জের ওই ভন্ড কবিরাজকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিলে আদালত তাকে জেলা কারাগারে পাঠায়।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের ইছাখালীর বাসিন্দা প্রতিবন্ধী খোকন মিয়া তার ক্যান্সার আক্রান্ত ৭ বছরের শিশু ইমরান হাসানের হটকিং লিমফোমা সারাতে দেশের বহু চিকিৎসক দেখিয়ে সমাধান না পেয়ে শেষে, ভন্ড কবিরাজ মো. আলীর খপ্পরে পড়ে ১০ লাখের অধিক টাকা হারান।
ভুক্তভোগী খোকন মিয়া বলেন, তিনি ছেলের চিকিৎসার জন্য একজন ভালো ডাক্তারের সন্ধানে ঘুরছিলেন। এরই মাঝে ঢাকা মেডিকেলের সামনে দেখা হয় এক দরবেশ পরিচয়ের মোহাম্মদ আলী কবিরাজের সঙ্গে। শেষ ভরসা মনে করে খোকন ওই মোহাম্মদ আলীর ভক্ত হয়ে যান। মোহাম্মদ আলী খোকনের ছেলে ইমরানের ক্যান্সার সারাতে ভারতের বড় কবিরাজ দিয়ে তদবির করার প্রস্তাব দেয়। এতে ২০ লাখ টাকা দফায় দফায় খরচের কথা জানালে খোকন তাতে রাজি হন। ইতোমধ্যে ৫ বারে ১৭ লাখ টাকা ওই মোহাম্মদ আলীকে দেয় খোকন।
তিনি আরো বলেন, ভারতের বড় কবিরাজ দিয়ে তদবির আনার কথা বলে, টাকা নেয়ার পর মোহাম্মদ আলী তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের সিম বন্ধ করে দেন। এরপর খোকন মিয়া পাগলের মতো খুঁজতে থাকে মোহাম্মদ আলীকে। তার দেয়া সাভারের সাপের বাজার এলাকার ঠিকানায় খোঁজ নিয়ে ও ছবি দেখিয়ে জানতে পারেন সে কবিরাজ নয়। বেদেপল্লির প্রতারক বেদে। যাদু টোনা আর কবিরাজির নাম করে বহু লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওখান থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
আরো জানতে পারে, সে দাড়ি কেটে ছদ্মবেশে ঢাকায় অজ্ঞাত স্থানে বসবাস করে আসছে। এসব জানতে পেরে খোকন মামলা দায়ের করেন রূপগঞ্জ থানায়। এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা ও রূপগঞ্জ থানা পুলিশের লোকজন যৌথ তদন্ত পূর্বক ওই প্রতারককে গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন। পরে গত ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে রূপগঞ্জ থানার এসআই ফয়সাল আলমসহ সঙ্গীয় ফোর্স মাদারিপুরের বেদেপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া যায় আসল নাম ও পরিচয়। তার আসল নাম রপন সরদার। বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনি থানার চর ঠেংগামারা বেদেপাড়ায়। গত ২৭ আগস্ট তিনি জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে দাবিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন এখন।
এর আগে ২০২১ সালে খোকন মিয়ার ডায়াবেটিস মাত্রা বেড়ে গেলে পায়ের ইনফেকশন হলে ডাক্তার একপা কেটে দেয়। এতে সে কৃত্রিম পা লাগিয়ে কোনমতে চলাফেরা করে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতারণার শিকার হয়ে সে এখন নিঃস্ব প্রায়।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য