-->

বস্তায় আদা চাষ করে সফল গৌরীপুরের শামছুল

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
বস্তায় আদা চাষ করে সফল গৌরীপুরের শামছুল
আদা গাছ পরিচর্যা করছেন শামছুল হক

বাজারে আদার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মূল্যের ঊর্ধ্বগতি থামাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণে বলেন, আপনারা এক ইঞ্চি জায়গাও ফাঁকা রাখবেন না। নিজেদের বাড়ির চারপাশে আদা, মরিচ চাষ করুন। এ আহব্বানে উজ্জীবিত হয় ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মো. শামছুল হক। তার নিজের বাড়ির চারপাশে বিশাল জমি পরিত্যক্ত।

 

স্থানীয়ভাবে এসব জমির নাম পাঞ্জা (বন্ধ্যা)। সেই বন্ধ্যা জমিতে ফসল ফলানোর উদ্যোগ নেন মো. শামছুল হক। বাড়ির আঙ্গিনায় বস্তায় আদা চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজারে আদা, কাঁচামরিচের মূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে সবাইকে যার যেখানে যতটুকু জমি আছে, সেইটুকু ব্যবহারের আহব্বান জানান। নেত্রীর এ বক্তব্য শোনে বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু করতে চাইলাম। স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও এনজিও কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তেমন সাড়া পাইনি। তখন ইউটিউবে বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি দেখে নিজেই শুরু করলাম।

 

তিনি আরও জানান, এখানে ৩৫০টি বস্তায় আদা চাষ করেছি। প্রতিটি বস্তায় গড়ে ২ কেজি আদা হয়েছে। যার বাজারমূল্য ১৩-১৪ হাজার টাকা হবে। এ আদা উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। আর আমার গরুর খামারের গোবর দিয়ে জৈব সার উৎপাদন করে প্রতিবস্তায় ভরেছিলাম।

 

শামছুল হককে দেখে প্রতিবেশীরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পাছার গ্রামের সুরুজ আলী জানান, তার নিজের ঘরের ভিটি মাটির। ভিটির পাশে ৮টি আদার টুকরা লাগিয়ে ছিলাম। এখন নিজের পরিবারের আর আদা কিনতে হয় না। ভালুকাপুর গ্রামের আরশাদ আলী বলেন, শামছুলের মতো আমিও বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছি। চমৎকার ফলন হয়েছে।

 

ধোপাজাঙ্গালিয়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান জানান, আদা চাষ অত্যন্ত সহজ। ঔষধী গুণাগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় কদরও অনেক। ঘরের পাশে বেড বানিয়ে আদা রোপণ করেছি। ভালো হয়েছে। এভাবে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। তাহলে দেশ সমৃদ্ধ হবে।

 

এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি অফিসার নীলুফার ইয়াসমিন জলি বলেন, শুধু শামছুল নয় এভাবে অনেকেই আদা চাষ করেছেন। কম খরচে বস্তায় আদা চাষ করেছেন। যেসব স্থানে সাধারণত ফসল হয় না, সেই স্থানকে ফসলের মাঠে রূপ দিয়েছেন।

 

উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান জানান, গরুর খামার, কবুতর পালনসহ নানাকাজে ইতোমধ্যে উপজেলায় অনেকেই সফল। এখন গ্রামের পাঞ্জা (বন্ধ্যা) জমিতে বিকল্প পদ্ধতিতে ফসল চাষ করেছেন। সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে তারা।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version