রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী মহাদেবপুর, বেনিনগর ও কালিতলা এলাকায় থেমে থেমে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহের ভাঙনে প্রায় ৩০ বিঘা ফসলি জমি বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে সহস্রাধিক পরিবারসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গ্রামীণ সড়ক, ব্রিজসহ বহু স্থাপনা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মিজানপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী মহাদেবপুর, বেনিনগর ও কালিতলা এলাকাজুড়ে থেমে থেমে ফসলি জমি ভাঙছে। মাঝেমধ্যে ভাঙনের মাত্রা বেশি দেখা যায়। নদীর পাড়ের অনেক জায়গা দেবে গেছে। পটল, ডেড়স, ধুনদুল, উচ্ছেসহ নানা সবজি ও ফসল তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কৃষক।
মহাদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ফসলি জমির পর এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে মহাদেবপুর, বেনিনগর ও কালিতলা গ্রামের হাজার হাজার বসতবাড়ি, গ্রামীণ সড়ক, ব্রিজ, মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিলিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু স্থাপনা। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বেনিনগর গ্রামের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম জানান, প্রতিনিয়ত ভাঙনের কারণে নিঃস্ব হচ্ছেন তারা। নদীর পাড় যেভাবে ভাঙছে এতে বসতবাড়িতে নির্ঘুম রাত কাটে পদ্মাপাড়ের বাসিন্দাদের। এ কারণে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
লালগোলা এলাকার বাসিন্দা সুলতান সরদার বলেন, নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে, এখনো কাজ শুরু হয়নি। আবার গত বছরের ভাঙনে যেসব এলাকায় ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিল সেগুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে গাঁজাখোর ও বখাটেরা। এতেও বাড়ছে ঝুঁকি। আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল আমীন বলেন, রাজবাড়ী জেলায় পদ্মা, হড়াই ও গড়াইসহ ৮৫ কিলোমিটার নদীপথ রয়েছে। যেখানেই ভাঙন দেখা দেয় গুরুত্বভেদে ব্যবস্থা নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিছু অসচেতন মানুষ জিও ব্যাগ কেটে নিয়ে যাওয়ার কারণে একই এলাকায় বারবার ভাঙন দেখা দেয়।
তিনি বলেন, আবার পানি বাড়লে ওইসব এলাকা চিহ্নিত করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। তাই এলাকাবাসীকে এ ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। আমরা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডেও পক্ষ থেকে ভাঙন প্রতিরোধে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য