-->
শিরোনাম

সাত বছরেও হয়নি রাস্তা, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
সাত বছরেও হয়নি রাস্তা, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
কালীগঞ্জের বাকুলিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো পেরিয়ে চলাচল করে শিক্ষার্থীরা

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের সাত বছরেও তৈরি করা হয়নি কোনো রাস্তায়। বিল এলাকা হওয়ায় বছরজুড়ে বিদ্যালয়ের চার পাশের নিচু জমিতে পানি জমে থাকে। বর্ষায় ঝুঁকিপূর্ণ দুটি সাঁকো পেরিয়ে বিদ্যালয়ে যায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কালীগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড বাকুলিয়া গ্রামের বাকুলিয়া বিলের মধ্যে জহুরা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

 

বিদ্যালয়টি বাকুলিয়া টু শ্রীরামপুর সড়ক থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে বিলের মধ্যে অবস্থিত। প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৭৬ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। তাদের পাঠদান করেন পাঁচজন শিক্ষক।

 

২০১৬ সালে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর ৩টি শ্রেণিকক্ষ ও একটি অফিস কক্ষের একতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার জন্য কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। এদিকে বিলে অবস্থিত হওয়ায় বছরজুড়ে স্কুলের চারপাশের নিচু জমিতে পানি জমে থাকে। বর্ষা মৌসুমে বিলে জমে থাকা পানি বের করার জন্য এলাকাবাসীর সহযোগিতায় দুটি ছোট ছোট কাঠের সেতু নির্মাণ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

 

সরেজমিনে চলাচলের প্রায় অনুপযুক্ত মেঠো পথ ও ভাঙা দুটি কাঠের সেতু পার হয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেছে।

 

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রিপন মিয়া ও তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন জানায়, ওই রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে তাদের খুব কষ্ট হয়। কাঠের এই সেতু দিয়ে পার হওয়ার সময় অনেকে পানিতে পড়ে যায়। আবার স্কুল মাঠে পানি-কাদা থাকায় তারা ভালোভাবে খেলতেও পারে না।

 

বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সজিব হাসানের মা বিথী বেগম বলেন, স্কুল করেছে, তো রাস্তা করবে না? ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। আমার ছেলে একদিন স্কুলে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়েছিল। আমিও একদিন স্কুলে ছেলের টিফিন দিতে যেয়ে স্লিপ করে পড়ে যাই। বর্ষাকালে এ ধরনের সমস্যা আরো বেশি হয়। ছেলেকে স্কুলে দিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন খান বলেন, শুনেছি বাকুলিয়া থেকে শ্রীরামপুর সড়কসংলগ্ন জমিতে একটি কলেজ হওয়ার কথা রয়েছে। এ কারণে স্কুলের রাস্তা নির্মাণের জন্য জমি নির্ধারণের জটিলতা রয়েছে। তাই রাস্তার কাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে।

 

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফাতেমা খাতুন জানান, ‘বিদ্যালয়ের রাস্তা করার জন্য নিজস্ব জমি নেই। সামনে একটি কলেজ হওয়ার কথা। সেটি হলে তখন দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি রাস্তা করা হবে। আমিও চেষ্টা করছি যাতে স্কুলের রাস্তাটি দ্রুত হয়।’

 

কালীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদুল হাসান জানান, ‘বিদ্যালয়টির রাস্তার অভাবে তৈরি দুর্ভোগ দেখেছি। উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় রাস্তার ব্যাপারে কথা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত স্থানীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রাস্তাটি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’

 

জানতে চাইলে কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম বলেন, ‘আমার কাছে বিদ্যালয়ের দাবি ছিল, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও যাতায়াতের রাস্তা। খুঁটি দিয়ে দিয়েছি, আর রাস্তা নির্মাণের জায়গা নির্ধারণ করে দিলেই আমি করে দেব। ইতোমধ্যে একটি প্রকল্পে স্কুলের রাস্তার স্টিমেট সংযুক্ত করে রেখেছি।’

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version