-->
শিরোনাম

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের ফকির বাল্লেগশাহ মসজিদ

কুমিল্লা প্রতিনিধি
ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের ফকির বাল্লেগশাহ মসজিদ
ফকির বাল্লেগশাহ মসজিদ

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বাংগড্ডা ইউনিয়নের দাড়াচৌ গ্রামে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুঘল শাসনামলে নির্মিত তিন গম্বুজের ফকির বাল্লেগ শাহ্ মসজিদ। প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন মসজিদটিতে এক নজর দেখার জন্য, কেউবা এবাদত করার জন্য আসেন। বর্তমানে সংস্কারের অভাবে অন্তত ৫০০ বছর পুরোনো মসজিদটি প্রায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

 

বর্তমানে মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় এটিতে নামাজ আদায় করা হয় না। শেওলা আর লতা-পাতায় জন্ম নেয়ায় এর রং নষ্ট হয়ে গেছে। তাই পুরোনো এই মসজিদের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আরো একটি মসজিদ।

 

এটি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ বলে জানা গেছে। এখানে নারীদের নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাংগড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে পশ্চিম-উত্তর দিকে দাড়াচৌ গ্রামে অবস্থিত ফকির বাল্লেগ শাহ্ খন্দকারের মসজিদ। এক শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন গম্বুজের মসজিদটি।

 

ইতিহাসের বয়ানে জানা যায়, সূদুর ইরাকের বাগদাদ থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য আসা হযরত শাহ্জালালের (রা.) সঙ্গে ৩৬০ ওলির অন্যতম ছিলেন ফকির বাল্লেগ শাহ্ খন্দকার। ইসলাম প্রচারের জন্য পাহাড়, নদী, জঙ্গল বেষ্টিত গ্রাম দাড়াচৌতে অবস্থান করে নামাজ আদায়ের জন্য চুন, সুরকি দিয়ে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণ করেন তিনি। এটি নির্মাণের সময় মসজিদের পাশে কোনো বসতি ছিল না। পরে ধীরে ধীরে পুরো এলাকায় মানুষের বসবাস শুরু হয়।

 

মসজিদটির খেদমতকারী স্থানীয়রা জানান, তাদের বাপ-দাদার কাছে শুনেছেন, এই মসজিদের অনেক রহস্য রয়েছে। এখানে প্রতি বছর তার উরুস মাহফিল করা হয়। প্রতি শুক্রবার অনেক লোক মানতের উদ্দেশ্যে আসেন। প্রায় ৫০০ বছর আগের এই মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সংস্কার করার প্রয়োজন। প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা খরচ করে এর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আরো একটি মসজিদ। তাই পুরান মসজিদে বর্তমানে নামাজ পড়া হয় না।

 

স্থানীয়দের দাবি, মসজিদটি অতি দ্রæত সংস্কার করা হোক। মসজিদ কমিটির সভাপতি শামীম খন্দকার বলেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেছি, অনুমানিক ৫০০ বছর আগে বাল্লেগ শাহ্ ফকির আল বাগদাদি ইরাক থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন। পরে তিনি এখানে ইট-সুরকি দিয়ে কারুকাজ খচিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন। সরকারিভাবে মসজিদটি সংস্কার করে প্রতœতাত্তি¡ক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।

 

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, মসজিদটি সংস্কারের জন্য ওই এলাকার লোকজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। অবকাঠামো দুর্বল হওয়ায় বর্তমানে সেখানে নামাজ পড়ানো হচ্ছে না। তবে মসজিদটি সংস্কার করে ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে রাখা প্রয়োজন।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুব বলেন, মসজিদটি পরিদর্শন করে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version