-->
শিরোনাম

সরকারের দামে মিলছে না আলু-পেঁয়াজ-ডিম

জামালপুর প্রতিনিধি
সরকারের দামে মিলছে না আলু-পেঁয়াজ-ডিম
জামালপুর পৌর শহরের ফৌজদারি মোড় বাজার

জামালপুরের হাট-বাজারে সরকারের বেঁধে দেয়া দামে পাওয়া যাচ্ছে না আলু, পেঁয়াজ ও ডিম। দাম স্থিতিশীল রাখতে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও এ জেলার হাট-বাজারে সেই দামে মিলছে না এসব পণ্য। নির্দিষ্ট দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এ অঞ্চলের অধিকাংশ আলু পেঁয়াজ উত্তরবঙ্গেও পাইকারি বাজার থেকে আসে। সরকারের নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের পাইকারি বাজারে বিক্রি হলে এ অঞ্চলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন জেলা জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম।

 

জানা যায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি কেজি আলুর খুচরা দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির প্রতিটি ডিমের দাম ১২ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে জামালপুরের হাট-বাজারে এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতে।

 

জামালপুর পৌর শহরের ফৌজদারি মোড় বাজার, আনন্দগঞ্জ বাজার (সকাল বাজার) ও শফি মিয়ার বাজার ও বানিয়া ঘুরে দেখা যায়, ‘বেশির ভাগ দোকানেই নেই পণ্যের মূল্য তালিকা। আবার কিছু কিছু দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা রয়েছে। তবে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম সরকারের বেঁধে দেয়া মূল্য অনুযায়ী তালিকায় নেই’।

 

পৌর শহরের আনন্দগঞ্জ বাজারে (সকাল বাজার) প্রতি কেজি আলু ৫০-৬০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৭০-৭৫ টাকা এবং ডিম ১২-১৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শফি মিয়ার বাজারে প্রতি কেজি ৪৫-৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৭৫-৮০ টাকা এবং প্রতিটি ডিম ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই অবস্থা বানিয়া বাজার ও ফৌজদারি মোড় বাজারসহ জেলার প্রতিটি বাজারের। বেশির ভাগ দোকানেই টাঙানো হয়নি হালনাগাদ মূল্য তালিকা।

 

কিছু দোকানে মূল্য তালিকা থাকলেও নিজেদের ইচ্ছামতো দামেই বিক্রি করা হয় সব পণ্য। সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরও সেই দামে পণ্য না পেয়ে হতাশ ক্রেতারা। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ সরকার দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পরও বাজারে প্রশাসন বা ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণের কেউ অভিযান করিনি।

 

পৌর শহরের আনন্দগঞ্জ বাজারের (সকাল বাজার) ব্যবসায়ী মঞ্জু মিয়া বলেন, পাইকারি বাজার থেকে প্রতি কেজি আলু ৪০ টাকার ওপরে আমাদের কেনা। পেঁয়াজ দেশিটা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আমাদের যদি কেনা বেশি পড়ে তাহলে তো আমাদের বেশি বিক্রি করতেই হবে।

 

আনন্দগঞ্জ বাজারে (সকাল বাজার) আব্দুল করিম নামে এক ক্রেতা বলেন, প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না। দেড়শ টাকায় ৩ কেজি আলু কিনেছি। সরকার আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিন্তু বাজার তো সেই দাম পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণে জোরালো কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করতে পাড়ে। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের জোরালো পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

 

বানিয়া বাজারে ব্যবসায়ী আব্দুল মমিন বলেন, সরকার দাম নির্ধারণ করেছে এটা ভালো। তবে যে দাম নির্ধারণ করেছে, সেই দামে পাইকারি বাজারে আমরা কিনতে পারলে তো, সেই দামে বিক্রি করতে পারব।

 

ফৌজদারি বাজারের ক্রেতা মানিক বলেন, আলু পেঁয়াজ ডিমের দাম কমে নেই। আগের যে দাম ছিল তাই আছে। ভালো আলু প্রতি কেজি ৫০ টাকায় কিনতে হলো। ৪৫ টাকা করে বলছিলাম দিই না।এসব বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম, ‘কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা কেজি, করলা ৬০ টাকা, বেগুন ৮০-১২০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে জামালপুরের জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ডিমটা মোটামুটি সরকারের নির্ধারিত মূল্যেই বিক্রি হচ্ছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ অঞ্চলে অধিকাংশ আলু পেঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উত্তরবঙ্গ থেকে আসে। ব্যবসায়ীরা আমাদের যেটা জানিয়েছে ওখান থেকে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

 

তাই খুচরা বাজারে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা উত্তরবঙ্গে আমাদের অফিসারদের বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করি, দ্রুত একটা সমাধান আসবে। আমরা বন্ধের দিনও শুক্র ও শনিবারেও কাজ করে যাচ্ছি। বাজার নিয়ন্ত্রণে আমাদের সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version