হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি ধরে রাখতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নির্মিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডিং লঞ্চ ঘাট। দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক স্থাপত্য শিল্পের আদলে নির্মিত এ বোট ল্যান্ডিং র্যাম্পে এমপি থিয়েটার, পর্যটন স্পট, বাণিজ্যিক র্যাম্প, জেটি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে নির্মিত নয়নাভিরাম এ স্থাপনাটি সব বয়সের মানুষকে বিনোদন দিয়ে আসছে দীর্ঘ ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে। বর্তমানে এটি দেশ বিদেশের হাজারো দর্শক ও বিনোদন প্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।
গোপালগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইিডির) নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বঙ্গবন্ধু লঞ্চ বা নৌকায় পাটাগাতীর মধুমতী নদীর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকা, কোলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতেন। এ লঞ্চ ঘাটটির সাথে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে মহান নেতার স্মৃতিবিজড়িত স্থানকে অম্লান করে রাখতে ২০২০ সালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি বাজার সংলগ্ন মধুমতি নদীর পাটাগাতী লঞ্চঘাটে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডিং র্যাম্প নির্মাণ করা হয়েছে। বিনোদন প্রিয় মানুষ বিকেল হলেই সেখানে বেড়াতে আসেন, আর উপভোগ করেন নদীর পাড়ের মনোরম পরিবেশ।
গোপালগঞ্জ জেলায় এলজিইডির গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে কাবিকো অ্যান্ড জুয়েল কনস্ট্রাকশন এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করার জন্য এমপ্লি থিয়েটার রয়েছে। ল্যাডিং এর পর্যটন স্পট সব বয়সের মানুষকে কাছে টানছে। এখানে পণ্য ওঠানামা করার জন্য বাণিজ্যিক র্যাম্প ও জেটি রয়েছে।
এছাড়া পর্যটকদের প্রয়োজনীয় সব সুবিধা রয়েছে ল্যান্ডিং এর সুবিশাল পরিসরে। বর্তমানে পুরো স্থাপনাটি টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদের দায়িত্বে রয়েছে। এটি পর্যটকদের জন্য বিনামূল্যে উম্মুক্ত থাকে সব সময়। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত এ স্থানে বেড়াতে এসে সব বয়সের মানুষ ইতিহাস ও ঐহিত্য সম্পর্কে জানতে পারছেন।
পাটগাতী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লঞ্চে বা স্ট্রিমারে করে পাটগাতী লঞ্চঘাটে এসে নামতেন। তারপর তিনি পায়ে হেটে পাটগাতী বাজারে আসতেন। এখান থেকে তিনি কোন সময় পায়ে হেটে বা নৌকায় করে টুঙ্গিপাড়া গ্রামের বাড়িতে যেতেন। এ লঞ্চ ঘাটের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর শৈশব থেকে বিভিন্ন বয়সের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। এটি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থান। সরকার এটি সংরক্ষণ করেছে। এখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষ বেড়াতে এসে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পারছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার শ্রীরামকান্দি গ্রামের শতবর্ষী আব্দুল হামিদ শেখ বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত পাটগাতী লঞ্চঘাট সরকার সংরক্ষণ করায় আমি প্রধানমন্ত্রী ও এলজিইডিকে স্বাগত জানাচ্ছি। টুঙ্গিপাড়া এসে দর্শণার্থীরা বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল বোট ল্যান্ডিং দেখতে পারছেন। এটি দেখে দর্শনার্থীরা খুশি হচ্ছে। কিছুটা সময় তারা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানে কাটিয়ে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারছেন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য