মানবদেহে আমিষের চাহিদা পূরণকারী খেসারি ও মুগ ডাল ফসলের প্রায় ৪৫ ভাগই জোগান দিচ্ছে বরিশাল অঞ্চল। মাংসের পরেই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ থাকে ডালে। তাই আমাদের দেশের দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত মানবগোষ্ঠীর আমিষের চাহিদা পূরণে একটি সস্তা উৎস হিসেবেও ডাল বিবেচিত হয়। ডাল থেকে যে পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, তা ডিম, দুধ বা মাংসের মাধ্যমে অর্জন করতে প্রায় ৩ গুণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। এসব কারণে ডালকে গরিবের আমিষের সাথে তুলনা করা হয়ে থাকে।
এখনো দেশে ডালের চাহিদার বড় অংশই আমদানিনির্ভর। যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ভারসাম্যেও বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। বরিশালে গত বছর কৃষি অঞ্চলে প্রায় পৌনে ৩ লাখ হেক্টর জমিতে ৪ লাখ ২৯ হাজার টন বিভিন্ন ডাল ফসল উৎপাদন হয়েছিল। তবে আসন্ন রবি মৌসুমে বরিশাল অঞ্চলে ডাল ফসল আবাদ কিছুটা হ্রাস পেয়ে ৩ লাখ ৪৩ হাজার হেক্টরে নির্ধারণ করা হলেও উৎপাদন হয় ৪ লাখ ৪১ হাজার ৬২১ টন।
এ পর্যন্ত মসুর ডালের ৭টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন হয়েছে। এ ছাড়া খেসারির ৩টি, মুগ ডালের ৬টি, ছোলার ৯টি, মাষকলাই ডালের ৩টি, ফেলন ডালের ১ টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে বিজ্ঞানীরা। গত বছর রবি মৌসুমে ১,৫৫,৩২৫ হেক্টর জমিতে ২,২০,৪৪৩ টন মসুর ডাল উৎপাদন হয়।
এছাড়া ২,০৭,৯১৩ হেক্টরে ২,৬০,৪৯১ টন খেসারি ডাল উৎপাদন হলেও এর মধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই প্রায় ৯৩ হাজার হেক্টরে ১ লাখ ১৪ হাজার টন খেসারি ডাল উৎপাদন হয়েছে। এছাড়া গত রবি মৌসুমে দেশে প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার হেক্টরে উৎপাদিত ২ লাখ ৬১ হাজার টন মুগ ডালের মধ্যে বরিশাল অঞ্চলেই প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার হেক্টরে ২ লাখ ৫৩ হাজার টন মুগ ডাল উৎপাদন হয়েছে।
পাশাপাশি গত বছর দেশে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টরে ৪৬ হাজার টন ফেলন ডাল, ১০ হাজার হেক্টরে প্রায় ১৪ হাজার টন মটর ডাল উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়াও অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ মাসকলাই ডালের আবাদ ও উৎপাদন ছিল যথাক্রমে প্রায় ২৯ হাজার হেক্টর ও ৩৪ হাজার টন। এসব ডাল ফসলের একটি বড় অংশই বরিশাল কৃষি অঞ্চলে আবাদ ও উৎপাদন হয়েছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য