-->
শিরোনাম

নড়াইলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলে হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
আধুনিক সদর হাসপাতাল, নড়াইল

নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রভাবিত করে সরকারি ডাক্তাররা কমিশনের মাধ্যমে বেসরকারি ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ), নড়াইল জেলা শাখা।

 

বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের ৩০ স্বত্বাধিকারী স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রটি হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল গফফারের কাছে দাখিল করেছেন। বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি বিদ্যুৎ কুমার স্যানাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

অভিযোগের নথিসূত্রে জানা গেছে, আধুনিক সদর হাসপাতাল, নড়াইল অফিস চলাকালে হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাসসহ হাসপাতালের বেশকিছু ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অপারেশনের জন্য রোগীদের প্রভাবিত করে নির্ধারিত বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে অনৈতিকভাবে অর্থের বিনিময়ে সেবা প্রদান করছেন। ডাক্তারদের এমন কর্মকান্ডে সরকারি হাসপাতালের কর্মচারীদের মধ্যে সেবাপ্রত্যাশী রোগীদের প্রভাবিত করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অনৈতিক কমিশন প্রাপ্তির হিড়িক পড়েছে।

 

সরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন অপেশাদার দায়িত্বহীন আচরণে সাধারণ রোগীরা সঠিক সরকারি চিকিৎসা সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

 

অভিযোগে আরও বলা হয়, সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাসসহ হাসপাতালের বেশকিছু ডাক্তার বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রোগীদের সঠিক সেবাদানের পাশাপাশি বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি নিরপেক্ষ আচরণের জোর দাবি জানিয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন

 

বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার সভাপতি বিদ্যুৎ কুমার স্যানাল বলেন, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আলোচিত এই দুই ডাক্তারের নামে নিউজ হওয়ায় বিষয়টি জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তখন বিপিএইচওএ'র সদস্যগণের সিদ্ধান্ত মোতাবেক অভিযোগ করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে বিপিএইচসিডিএ’র সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ডাক্তার দীপঙ্কর বিশ্বাস ও গাইনি কনসালটেন্ট ডাক্তার সুব্রত কুমার বাগচিসহ নড়াইল সদর হাসপাতালের বেশকিছু ডাক্তার রোগী দেখার সময় বহিরাগত পছন্দমতো বেসরকারি ক্লিনিকের স্টাফদের নিয়ে রাউন্ড দেন। ডাক্তার যাওয়ার পরপরই নির্দিষ্ট রোগীদের প্রভাবিত করে তারা ডাক্তারদের নির্দেশে রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ অপারেশনের জন্য বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান।

 

তিনি আরো বলেন, ডাক্তার দীপঙ্কর বিশ্বাসের শ্যালক ডা. দীপের নামে লাইসেন্স নিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিক চালু করেছেন, সেটার মালিকানা ডা. দীপঙ্করের স্ত্রীও আছেন। মূলত ওই ক্লিনিকের সব রোগী সাপ্লাই হয় সদর হাসপাতাল থেকে দীপঙ্কর অনুসারী ডাক্তার ও কর্মচারীদের মাধ্যমে। এই অনৈতিক কর্মকান্ডের সমাধান চেয়ে আমরা নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি, জেলা সিভিল সার্জন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ৫ দপ্তরে অভিযোগ পাঠিয়েছি।

 

এ বিষয়ে নড়াইল সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দীপঙ্কর বিশ্বাস অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি রাউন্ডের সময় বহিরাগতদের নিয়ে রোগী যদি দেখে থাকি সেটা দেখভাল করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আছেন। আমি অফিস সময়ের পর সুবিধামতো যেকোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন করতেই পারি। সেক্ষেত্রে কোথায় চেম্বার করছি, অপারেশন করছি সেটা আমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।

 

হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবদুল গফফার বলেন, বিপিএইচসিডিওএ’র নড়াইল জেলা শাখার একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version