-->
শিরোনাম

তিস্তার দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দিশেহারা মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
তিস্তার দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, দিশেহারা মানুষ
লালমনিরহাটে তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে নিম্নাঞ্চল

ব্যাপক বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যা ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা অংশে বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে লালমনিরহাটের তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গেছে। তিস্তার দুই পাড়ের নিম্নাঞ্চল সহ চরাঞ্চল পানিতে ডুবে গেছে। সে পানিতে তলিয়ে গেছে চরের ফসল। বছরজুড়ে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। এ ছাড়া ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারের সংকট।

 

বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৩ সেমি. নিচে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে ২৫ সেমি ওপরে রেকর্ড করা হয়। সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৮ সেমি নিচে ও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেমি. ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচে প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে বিপাকে পড়েছেন বানভাসী মানুষ। গরু-ছাগল নিয়ে ঠাঁই নিয়েছেন বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে। উৎকণ্ঠায় রাত পার করলেও পানি নেমে যেতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। তবে বন্যা পরবর্তী ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে।

 

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের তথ্য জানায়, ভারতীয় সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের উত্তর সিকিমে তিস্তা নদীর চুংথাং ড্যাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে সিকিম অঞ্চলে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এ ছাড়াও রংপুর অঞ্চলসহ লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম এলাকায় রাত থেকেই বৃষ্টি চলছে।

 

গোবর্দ্ধন এলাকার কৃষক ফারুক মিয়া বলেন, চরে তিন দোন জমিতে রোপা আমন বপন করেছিলাম। ধান কাটার সময়ও চলে আসছে। হঠাৎ পানি আসায় সব ডুবে আছে। কতটুকু ধান থাকবে বলা মুশকিল।

 

আরেকজন কৃষক তোতা মিয়া বলেন, চরে কয়েকদিন আগে ধান কেটে রেখেছি। হালকা বৃষ্টি হয় জন্য নিয়ে আসিনি বাড়িতে। পানি আসার খবরে কোনোরকমে ভেজা ধান নিয়ে আসছি। বৃষ্টি পড়তেছে। তাই ধান মাড়াই করতেও পারছি না।

 

আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, বন্যার পানিতে চরের সবজি ক্ষেত, আলু, রোপা আমনসহ বিভিন্ন ফসল ডুবে আছে। মাঠ পর্যায়ে আমাদের লোকজন কাজ করছে। এখনো ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।

 

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি আর সারোয়ার বলেন, আমরা নদী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে ও বিভিন্নভাবে নদী এলাকার মানুষকে সচেতন করেছি। আমি গতকাল রাতে নদী এলাকা পরিদর্শন করেছি। সার্বিক খোঁজখবর নিচ্ছি। চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের লোকজনদের পশুপাখিসহ প্রস্তুতি নিয়ে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।

 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, উজানের ভারী ঢলে তিস্তায় আবারও বন্যা দেখা দিবে। আমরা সার্বিক খোঁজখবর রাখছি।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version