৬ বছর নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে সড়কবিহীন ব্রিজ

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
৬ বছর নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে সড়কবিহীন ব্রিজ
সংযোগ সড়কের অভাবে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে গাটিয়াডেঙ্গা সেতু পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী

চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলার আমিলাইষ ও নলুয়া ইউনিয়নের মাঝখানে বয়ে গিয়েছে ডলু নদী। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে বিগত ৬ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল এ নদীর উপর গাটিয়াডেঙ্গা সেতু। কিন্তু এখন পর্যন্ত সড়ক তৈরি হয়নি। ফলে ওই এলাকার সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এ দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।

 

সংযোগ সড়কের অভাবে সেতু নির্মাণের ৬ বছরেও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডলু নদীর ওপর নির্মিত গাটিয়াডেঙ্গা সেতুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গা ও আমিলাইষ ইউনিয়নের হিলমিলি অংশে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মধ্যে রশি টানাটানি চলছে।

 

প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে সওজ সেতুটি নির্মাণ করে। সওজ বলছে, সড়ক যেহেতু এলজিইডির, তাই নিয়ম অনুযায়ী অ্যাপ্রোচ সড়ক তারাই করবে। অন্যদিকে এলজিইডির প্রশ্ন, সড়ক বিভাগের নির্মিত সেতুতে এলজিইডি কেন সংযোগ সড়ক করবে।

 

সরেজমিনে এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এক সময় নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গা, কাঞ্চনা, আমিলাইষ, এওচিয়া ও পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থী, সাধারণ লোকদের দৈনন্দিন কাজ, কৃষির ফসলাদি কেনা-বেচার জন্য ডলু নদী পার হওয়ার একমাত্র রাস্তা ছিল নির্মিত সেতুটির স্থান। নৌকা ছিল যাতায়াতের একমাত্র বাহন। অন্য মৌসুমে নৌকায় পারাপারে তেমন ঝুঁকি না থাকলেও বর্ষায় মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করত লোকজন।

 

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজলি কাশেম এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ২০১৭ সালের শেষদিকে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়। সেতু নির্মিত হওয়ায় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হলেও শুধু সড়কের অভাবে এখন পর্যন্ত সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে সেতু পারাপার হতে হচ্ছে।

 

সেতু নির্মাণের পর জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সড়কের জন্য বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়েও সফল হয়নি। এভাবেই পার হয়েছে প্রায় ৬ বছর। বর্তমানে সওজ এবং এলজিইডি উভয় বিভাগ একে অপরকে দোষারোপ করে যাচ্ছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সাতকানিয়ার ডলু নদীর ওপর নির্মিত গাটিয়াডেঙ্গা সেতুতে উঠতে হয় সিঁড়ি বেয়ে।

 

ইয়ার মোহাম্মদ বলেন, ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ভূমি জটিলতার কারণে ব্রিজটির উভয় পাশে সংযোগ সড়ক এখনো নির্মাণ করা হয়নি। ফলে কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই ব্রিজটি ব্যবহার করতে পারছেন না। এতে প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

 

মো. রাশেদ নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা করে বলেন, এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি ছিল এই ব্রিজ। কিন্তু ব্রিজ নির্মিত হলেও এর কোনো সুফল আমরা পাচ্ছি না। রাস্তা না থাকায় রোগী, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের যাতায়াত দুরূহ হয়ে পড়েছে।

 

দোহাজারী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রৌকশলী সুমন সিংহ বলেন, আমাদের দায়িত্ব ছিল সেতু স্থাপনের। সেটি আমরা করেছি বাকিটা এলজিইডির।

 

সেতুটির সংযোগ সড়কের বিষয়ে জানতে চাইলে, সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোতালেব সিআইপি বলেন বিষয়টা নজরে আসছে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুত সমাধান করা হবে।

 

এই প্রসঙ্গে স্থানীয় সাংসদ নদভী বলেন, অতি দ্রুত সড়কের কাজ শুরু হবে এলজিইডির সংশ্লিষ্ট অফিসে কার্যাদেশ ও বরাদ্দ পৌঁছাতে দেরি হওয়ায় রাস্তার কাজ ধীরগতিতে হচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য