-->

পূজামন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

মো. রিপন রেজা, সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ)
পূজামন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
সোনারগাঁও পূজামন্ডপে শেষ মুহূর্তের কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঘরে ঘরে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। তাই নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলায় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে নিপুণ হাতে কাঁদা-মাটি, খড়, বাঁশ, সুতলি ও রং দিয়ে তৈরি হচ্ছে প্রতিমা। দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরির কাজে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা।

 

সোনারগাঁও উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, মন্ডপে মন্ডপে চলছে অবকাঠামো তৈরির কাজ। আবার কোথাও চলছে সাদা, লাল, কালোসহ বিভিন্ন রঙের কাজ। আসন্ন শারদীয় দুর্গা উৎসব ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে, সোনারগাঁয়ের পৌরসভাসহ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রায় ৪০টি পূজামন্ডপে দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে সোনারগাঁয়ের মৃৎশিল্পীরা। ১৪ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

 

প্রতিমা শিল্পী রতন পাল বলেন, দুর্গা মায়ের কাজ করতে খুব ভালোলাগে। মা দুর্গার জন্য ভোর থেকে মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করেও কোনো ক্লান্তি বোধ করি না। মৃৎশিল্পী আরো বলেন, দুর্গাপূজার জন্য একটা পুরো সেট বানাতে ৫-৬ জন মৃৎশিল্পীর অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিনের মতো সময় লাগে। অন্যান্য বছর প্রতিমার অর্ডার বেশি পেলেও এ বছর পেয়েছি মোট ১২টি মন্ডপের কাজ।

 

সোনারগাঁ মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কামারগাঁও এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক পূজামন্ডপের সভাপতি শ্রী সুমন দত্ত বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গোউৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদযাপন করার জন্য প্রতিবারের মতো এবারো প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

পূজামন্ডপের সাধারণ সম্পাদক শ্রী বিশ্বনাথ দত্ত বলেন, ইছাপাড়া, মোগরাপাড়া ও কামারগাঁওসহ সকল পূজামন্ডপের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। পুজোতে আগত অতিথিদের কোনো রকম অসুবিধা বা হয়রানি হতে না হয়, তার জন্যে সকল রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি শম্ভুনাথ দত্ত ও বর্তমান সভাপতি শ্রী লোকনাথ দত্ত বলেন, এবার শারদীয় দুর্গাপূজা হবে উৎসবমুখর। যা পূর্বে কখনো হয়নি। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব আগত অতিথিদের আপ্যায়নের জন্যে।

 

পূজামন্ডপে থাকা জিকু রায় জানান, এখন চলছে রং তুলির কাজ। আনন্দঘন ও প্রাণবন্ত পরিবেশে চলছে কারিগরি শিল্প নৈপুণ্য। দুর্গোৎসব ঘিরে উপজেলার জনপদে আনন্দের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। কেউ আবার অগ্রিম শুভেচ্ছাসহ নিমন্ত্রণ দেয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছে।

 

সোনারগাঁও ইউএনও রেজাউনুল ইসলাম বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এ উপলক্ষে সরকারি বরাদ্দ আসামাত্র সকল পূজামন্ডপের কর্মকর্তাদের নিয়ে মতবিনিময় করে সরকারি বরাদ্দকৃত চাউলের ডিউ লেটার তাদের নামে বিতরণ করা হবে। সকল পূজামন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যে প্রশাসনিক প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হবে। সেই সঙ্গে পূজামন্ডপে আধুনিক সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে বলে জানান তিনি।

 

সোনারগাঁ থানার ওসি মাহবুব আলম সুমন বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে তাদের তীর্থস্থান বারদীসহ শম্ভুপুরা, সাহাপুর, আনন্দবাজার, জামপুর, পৌরসভা, কাঁচপুর, সম্মানদি, মোগরাপাড়া এলাকার বিভিন্ন জায়গায় যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য মন্ডপে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনসহ পুলিশের টহল পূজার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version