জেলায় চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অতিরিক্ত ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। জেলায় এবারে মোট ২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে এবারে আমন ধানের চাষ অর্জিত হয়েছে। কোনো প্রকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে। বাসস।
দিনাজপুর জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নুরুজ্জামান মিয়া জানান, দেশের খাদ্য উৎপাদিত জেলা হিসেবে পরিচিত দিনাজপুরে এবারে কোনো ধরনের বন্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় বাম্পার আমন ধান ফলন অর্জিত হয়েছে।
বাংলা কার্তিক মাসের মাঝা-মাঝি থেকে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়। তিনি বলেন সম্প্রতি দিনাজপুরে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন ধানের জমিতে পানি জমে ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন বৃষ্টিপাত না থাকায় ধানের জমির অতিরিক্ত পানি নেমে গেছে। বন্যার আশঙ্কা আর নেই। গত ৮ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলার অর্জিত আমন ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করে এবারে এ জেলায় বাম্পার আমন ধান ফলনের আশা করছেন।
তিনি পরিদর্শন কালে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্থ হয়েছেন এবারে ধানের ফলন ভালো হবে। কৃষকেরা উৎফুল্ল প্রকাশ করে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় এবারে কোনো রোগ-বালাই না থাকায় ভালো আমন ধানের ফলন পাবেন বলে কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালকের নিকট কৃতজ্ঞতা করেছে। আগাম জাতের ধান আগামী কার্তিক মাসের মাঝা-মাঝি থেকে কাটা মাড়াই শুরু হবে। অগ্রাহায়ণ মাস পুরোটাই ধান কাটা মাড়াই চলবে।
তিনি জানান, দেশের শস্য ভান্ডার বলা হয় এই জেলাকে। দেশের সিংহভাগ ধান উৎপাদন হয়ে থাকে এই জেলায়। চলতি বছর আমন ধানের ভালো ফলন হবে। বিস্তীর্ণ মাঠে শোভা পাচ্ছে সবুজ ধান ক্ষেতের ধান গাছ। চলতি বছর ২ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ অর্জিত হয়ে মোট ২ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের ফলন হয়েছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, চলতি আমন মৌসুমে অতিরিক্ত ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ অর্জিত হয়ে মোট ২ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে এবারে আমন ধানের ফসল হয়েছে। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না থাকায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি জানান, এবারে আমন মৌসুমে উন্নতমানের আমন ধান বীজ, যথা সময়ে ধান ক্ষেত্রে সার প্রয়োগ, সঠিক পরিচর্যা ও আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ বছর ধান আবাদ করে আশার মুখ দেখছি। এক দিকে ধানের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এবার উৎপাদিত ধান জেলার চাহিদা পূরণ করে জেলা বাহিরে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের সূত্রটি জানায়, বিগত সময় জেলায় উৎপাদিত ধানের অর্ধেক এই জেলার খাদ্যের চাহিদা পূরণ করত। এবারে গত ইরি-বোরো এবং চলতি আমন মৌসুমে বাম্পার ফলন উৎপাদিত হওয়ায় অর্ধেকের বেশি উৎপাদিত চাল দেশের অন্য জেলায় চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য