-->
শিরোনাম

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

এনামুল হক রাঙ্গা, বগুড়া
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবন বিপর্যস্ত
বগুড়া শহরের ফতেহ আলী বাজার থেকে ছবিটি তোলা

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নাভিশ্বাস উঠেছে ক্রেতাসাধারণের। দেশের মানুষের জীবন যাত্রায় প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের বাজারমূল্য একের পর এক বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের নিত্য আহারের প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজারেও হু হু করে বাড়ছে সকল দ্রব্যসামগ্রীর দাম। দিন দিন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে কাঁচাবাজারের চিত্র, একের পর এক নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চিন্তিত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের জনসাধারণ।

 

উত্তর জনপদের সবজি ভান্ডার খ্যাত শহর বগুড়া জেলার বিখ্যাত কাঁচাবাজার মহাস্থান গড়সহ জেলার রাজাবাজার ও শাহ ফতেহ আলী বাজার ঘুরে কেনা-বেচার দাম জানতে চাওয়া হয় ফতেহ আলী বাজারের পাইকারি ও খুচরা কাঁচা তরকারি ব্যবসায়ী মকবুল হোসেনের কাছে, তিনি বলেন, আজকের বাজারে গোল আলু ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, বেগুন ১০০/১২০ টাকা কেজি, পটল ৭০/৮০, ঝিঙে ৮০, করলা ১০০, মিষ্টি লাউ, ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, চাল কুমড়ো ৩০ থেকে ৫০ টাকা পিচ, ফুল কপি থেকে ১৬০/১৮০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই।

 

তাছাড়া ও বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি লালশাক ৫০ টাকা, পুঁইশাক ৪০/৫০ টাকা, লাউশাক ৫০ টাকা, পালংশাক ৮০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচের দাম ১৫০ টাকা কেজি, শসা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

 

বাঁধাকপি ৮০ কেজি, লাউ প্রতি পিচ ৪০/৫০ টাকা, কাকরুল ৮০ টাকা কেজি, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, মূলা ৪০/৫০ টাকা কেজি, এছাড়াও কচুরমুখি যার মূল্য বর্তমান বাজার প্রতিকেজিতে ৮০/১০০ টাকা পর্যন্ত।

 

বাজারে কেনাকাটা করতে আসা প্রাইভেট অফিসের এক অফিস সহকারী পদে চাকরি করা কৈগাড়ী এলাকার শাপলা বেগমের সাথে দাম বৃদ্ধির কথা জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, যে হারে বাজারে কাঁচা তরি-তরকারির দাম বাড়ছে তাতে আমাদের স্বল্প আয়ের মানুষের জীবন চালানো অসহনীয় হয়ে পড়ছে। বাজার ব্যবস্থা এই রকম চললে আমাদের তো একবেলা না খেয়ে থাকতে হবে।

 

তবে এসবের ভিড়ে এই সময়ে বাজারে সবচেয়ে দাম কমেছে আদা ৩২০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। অপরদিকে রসুনের দাম ৬০ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি। রাজাবাজারের ব্যবসায়ী শিপুল মন্ডলের কাছে দাম বৃদ্ধির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের পাইকারিতে যখন বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তখন খুচরা বিক্রিতে কম কেমন করে দিব, পণ্য সংকটের কারণে বেশি দামে কিনে আমাদেরকেও বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

 

রাজাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক, পরিমল প্রসাদ রাজ বলেন, গত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টির কারণে বাজারে কাঁচা তরিতরকারি আমদানি কম হওয়ার কারণে দাম এভাবেই বেড়ে চলেছে।

 

কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী মকছেদ আলী বলেন, এই দামই নয় শুধু দুই একদিনের মধ্যে কাঁচা বাজারের পণ্যের দাম আরো বাড়বে। কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, এই যে বৃষ্টি হচ্ছে, এমন বৃষ্টি র ফলে তরিতরকারি ও সবজি ক্ষতির মুখে পড়বে তাই বাজারে আরো দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে। বাজারে মুরগি দাম ও কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানান মুরগি ব্যবসায়ী আইনুল হক।

 

ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ৩৬০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি,৬৩০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ।

 

অপরদিকে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি, ছাগলের মাংস বিক্রি ১০০০/১১০০ টাকা কেজি, বাজারে বড় রুই মাছ, ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, কাতলামাছ ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কেজি, ইলিশ ছোট বড় আকার ভেদে ৯০০ থেকে ১৮০০ টাকা কেজি, মৃগেল ২০০/৩৫০ টাকা কেজি, ব্রিগহেড মাছ ৩৫০/৪৫০ টাকা কেজি, বোয়ালমাছ ১০০০/১৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে হরহামেশাই।

 

অপরদিকে বাজারে টেংরা পুটি শাটিসহ সবধরনের ছোট মাছের দাম ও আকাশচুম্বী। যা প্রতিনিয়ত বাজার করতে আসা ক্রেতা সাধারণের কাছে দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে জনতার এখন হাঁসফাঁস অবস্থা শুরু হওবার দশা ঘটেছে।

 

কাঁচা বাজারের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাইলে ভোক্তা অধিদপ্তরের বগুড়ার পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী বলেন, গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নতুন সবজি বাজারে সংকট পড়েছে, তবে এটা কিছুদিনের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণে আসবে। আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করতে আছি সবদিক বিবেচনা রেখে চেষ্টা করছি বাজার দরটা যেন ক্রেতাদের নাগালের বাইরে না যায়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version