-->
শিরোনাম
নিষেধাজ্ঞার ৪ দিন

এখনো চাল পাননি বেশিরভাগ জেলে

ভোলা প্রতিনিধি
এখনো চাল পাননি বেশিরভাগ জেলে
জাল বুনে অলস সময় পার করছেন ভোলার জেলেরা

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও পুনর্বাসনের চাল পায়নি ভোলার বেশিরভাগ জেলে। এতে অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন তারা। একদিকে ঋণের বোঝা, অন্যদিকে পরিবারের সদস্যদের মুখে কীভাবে তিন বেলা খাবার তুলে দেবেন সে চিন্তায় দিশেহারা তারা। এমন বাস্তবতার মুখে অনেক জেলেই আবার বাধ্য হয়ে পেটের টানে ইলিশ ধরতে গিয়ে জেল-জরিমানার মুখে পড়ছেন।

 

এ অবস্থায় জেলেদের খাদ্য সহায়তার চাল দ্রুত বিতরণের দাবি তাদের। ভোলার ধনিয়া, কাচিয়া, ইলিশা ও শিবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন ঘাট ঘুরে জেলেদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য মিলেছে।

 

জানা গেছে, ২২ দিন মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ ধরা বন্ধ রয়েছে। আর তাই জেলেদের কেউ জাল বুনছেন, কেউবা জাল-নৌকা মেরামত করে সময় পার করছেন। উপকূলের জেলেদের এমন কর্মব্যস্ততা থাকলেও তাদের চোখে-মুখে জীবিকা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা। কারণ মাছ ধরা বন্ধের পর পেরিয়ে গেছে ৪ দিন। কিন্তু তারপরও বেশিরভাগ জেলের হাতে পৌছায়নি পুনর্বাসনের চাল। আর তাই কীভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন আর কীভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাবেন তা নিয়ে সংকটে পড়েছেন বেকার জেলেরা।

 

জেলে আব্দুল কুদদুস বলেন, দুই বছর আগে জেলে কার্ড করতে দিয়েছি, আজও হাতে পাইনি। তাই সরকারের চালও পাচ্ছি না।

 

সোহাগ ও জসিম বলেন, মাছ ধরা বন্ধ। আমাদের আয় ইনকাম নেই। বেকার সময় কাটাচ্ছি। চার দিন গেলেও আমরা চাল পাইনি। কবে পাব তাও জানি না।

 

তুলাতলী এলাকার জেলে বশির মাঝি বলেন, আমাদের ইউনিয়নে অনেকে চাল পেয়েছে, আবার অনেকে পায়নি। যারা পায়নি তারা অনেক কষ্টে আছেন।

 

ভোলার উপকূলের বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, বেকার জেলেদের দুর্দিন। মাছ ধরা বন্ধ হওয়ায় উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। আর তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন অতিবাহিত করছেন তারা। এমন অবস্থায় জেলেরা দাবি তুলেছেন নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন যদি এনজিও কিস্তি বন্ধ রাখা হতো তাহলে কিছুটা হলেও সংকট দূর হতো।

 

এদিকে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকায় নদীতে নামতে পারছেন না জেলেরা। অন্যদিকে মাছের ডিম ছাড়া নির্বিঘ্নে করতে প্রশাসনের চলছে কঠোর অভিযান। আর তাই মাছ ধরা থেকে বিরত থাকলেও অভাব ছাড়ছে না জেলেদের। তবে মৎস্য কর্মকর্তা বলছে খুব শিগগিরই চাল বিতরণ শেষ করবেন।

 

এ ব্যাপারে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের চাল বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। আশা করি খুব দ্রুত সব ইউনিয়নে বিতরণ কার্যক্রম শেষ হবে। ইলিশ সম্পদ রক্ষায় আমাদের নিয়মিত টহল চলছে। যারা আইন অমান্য করার চেষ্টা করছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

এদিকে নিষেধাজ্ঞার পর এ পর্যন্ত ৫১টি অভিযানে ১৫ হাজার মিটার কারেন্ট জালসহ দুই জেলেকে জেল জরিমানা করা হয়েছে। ১৫ হাজার মিটার জাল ও ১৬০ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version