প্রাণ-প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য ও সবুজের সমারোহের কারণে রেডিয়েন্ট গার্ডেনে বাড়ছে পর্যটক। নান্দনিক এ গার্ডেনে রয়েছে হর্টিকালচার, গবাদিপশু পালন, মৎস্য খাবমার, কুটির শিল্প, পর্যটনকেন্দ্র ও সেবামূলক বহুমাত্রিক কার্যক্রম। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে উঠা এ খামারটির সুনাম দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তাই প্রতিনিয়ত প্রচুর পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত হচ্ছে এ অঙ্গন। পর্যটন নগরী কক্সবাজার থেকে মাত্র ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে উখিয়ার কুতুপালং বিটিবি স্টেশনের বিপরীতে প্রধান সড়কের পার্শ্ববর্তী ৭৫ একর উঁচুনীচু ভূমিতে রেডিয়েন্ট গার্ডেন অবস্থিত।
রেডিয়েন্ট বিজনেস কনসোটিয়াম লিমিটেড কোম্পানি কক্সবাজার ও পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তের অভ্যন্তরে পাখির কলকাকলীতে মুখরিত নৈসর্গিক সৌন্দর্যের আঁধার এ রেডিয়েন্ট গার্ডেন হচ্ছে উল্লেখিত কোম্পানির একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। প্রতি শুক্র-শনিবার এ গার্ডেনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঢল নামে পর্যটকের। রেডিয়েন্ট গার্ডেন ভ্রমণ করছেন কক্সবাজারে আসা শতশত পর্যটক ও গবেষক। অনেক প্রকৃতিপ্রেমীদের দেখা মিলে এ গার্ডেনে।
এখানে শত প্রজাতির ফল, ফুলের বাগান যেমন শোভা বর্ধন করছে, তেমনি বনজ ও ঔষধী গাছে ভরপুর এ বাগান। আম, জাম, কাঠাল, পেয়ারা, জাম্বুরা আনারস, জলপাই, লেবু, ড্রাগন, কামরাঙ্গাসহ নানা জাতের ফল-ফুল, ঔষধী গাছ, বনজ ও বাঁশঝাড় মিলেমিশে একাকার সবুজের বনায়ন। সুপেয় পানির উৎস ও লেকের মিঠা পানিতে হচ্ছে পরিকল্পিত মাছ চাষ।
এর পাশাপাশি জনসেবা, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবার ব্রত নিয়ে স্থানীয়দের স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে রয়েছে এ প্রতিষ্টানের বহুমুখী কর্মতৎপরতা। যা স্থানীয় হতদরিদ্র মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের ঠিকানা হয়ে উঠেছে এই রেডিয়েন্ট গার্ডেন।
রেডিয়েন্ট গার্ডেনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আয়ের উৎসকে প্রাধান্য দিয়ে মুনাফা অর্জন করা এ প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ নয়। এ প্রতিষ্টানের পক্ষ থেকে ঘুমধুম পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের জন্য আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে তিনটি পুলিশ বক্স, নির্মাণ ও একটি পিকআপভ্যান উপহার দেয়া হয়েছে। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে রেডিয়েন্ট গার্ডেনের অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে তিনটি মাদরাসা ও একটি মসজিদ। রয়েছে বিশাল বিনোদন পার্ক। আছে রেস্টহাউস ও বিশ্রামাগার, নির্মাণ করা হয়েছে রোহিঙ্গা ট্রানজিট ক্যাম্প, তাছাড়া রয়েছে সুপরিসর হলরুম।
প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের পূর্বে পার্শ্ববর্তী এক হাজার পরিবারের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ, ঈদুল আজহার সময় দুস্থ এক হাজার পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয় গরুর মাংস। বন্যা ও দুর্যোগকবলিত এলাকায় খাবার, বস্ত্র, গ্যসের চ‚লা, সিলিন্ডার বিতরণ করা হয়। দরিদ্র পরিবারের অসহায় মহিলাদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ, শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণ, অসহায় যুবতী নারীদের বিয়ের জন্য পর্যাপ্ত সাহায্য প্রদান করা হয়।
কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাবের একদল সাংবাদিক রেডিয়েন্ট গার্ডেন পরিদর্শনে গেলে গত ১৫ অক্টোবর রেডিয়েন্ট গার্ডেনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মশিউর আলম লিটন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তাারিত তুলে ধরেন। এ সময় কয়েকজন স্থানীয় যুবক নারী ও শিশু পর্যটকের সঙ্গে কথা হয়। তারা রেডিয়েন্ট বিজনেস গার্ডেনের নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হন। প্রকাশ করেন তাদের অনুভূতি।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য