-->
শিরোনাম

তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব

মো. ফিরোজ, বাউফল (পটুয়াখালি)
তেঁতুলিয়া নদীতে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব
বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ শিকার করছেন জেলেরা

বাউফলের তেঁতুলিয়া নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব। তেঁতুলিয়া নদীর ৪১ কিলোমিটারে মধ্যে অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হলেও এর ৭-৮টি পয়েন্টে চলছে এ মা ইলিশ শিকার। শিকারকৃত মা ইলিশ অভিনব কায়দায় বিক্রি করা হচ্ছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার নদী বেষ্টিত ধুলিয়া, চন্দ্রদ্বীপ, কেশবপুর, নাজিরপুর ও কালাইয়া এই ৫ ইউনিয়নে মোট ৬ হাজার জেলে রয়েছেন। তারা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে সরকারি চাল দেয়া হলেও তারা নদীতে মাছ শিকার করছেন।

 

নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক জেলে জানান, তারা মহাজনদের কাছ থেকে দাদন নিয়ে জাল ও নৌকা ক্রয় করেছেন। প্রত্যেক সপ্তাহে তাদের কিস্তির টাকা দিতে হয়। তাই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তারা নদীতে মাছ শিকারে যান।

 

উপজেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, তেঁতুলিয়া নদীর ধুলিয়া, মঠবাড়িয়া, নিমদি, বগিসহ ৭-৮টি পয়েন্টে দিবা-রাত্র মা ইলিশ শিকার করেন অসাধু জেলেরা। তাদের প্রতিহত করতে নদীতে টহলের ব্যবস্থা করা হলেও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দিনে দু-একবার অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা মৎস্য বিভাগ। অসাধু জেলেরা মাছ শিকারে সাধারণ ট্রলার ও নৌকার পাশাপাশি পাখি ট্রলার ব্যবহার করেন। ওই পাখি ট্রলারের স্পিড এত বেশি যে, অন্য যেকোনো ট্রলার বা স্পিড বোর্ড দিয়ে ধাওয়া করেও তাদের ধরা যায় না।

 

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, মা ইলিশ শিকারের পর তা অভিনব কায়দায় বিক্রি করা হয়। শিকারকৃত ইলিশ বস্তায় ভরে গ্রামেগঞ্জে বাড়িতে বাড়িতে ফেরি করে বিক্রি করা হয়। কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মা ইলিশ বিক্রি করা হয়। মোবাইল ফোনে কল দিয়ে চাহিদা জানানোর পর তারা স্কুল ব্যাগ ও বস্তায় ভরে তা মোটরসাইকেলযোগে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেন। আবার নির্জন এলাকায় গর্ত করে পলিথিন ও লবণ দিয়ে শিকারকৃত ইলিশ মজুদ করে রাখা হয়। অবরোধের পর সেই মাছ অনত্র পাঠানো হবে।

 

অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, মৎস্য বিভাগের কতিপয় ব্যক্তির সাথে যোগসাজশে মাছ ধরা হয়। এ ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চৌকিদার ও দফাদাররা জেলেদের সাথে দফারফা করে জেলেদের মাছ শিকারের সুযোগ করে দেন।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুব আলম বলেন, ২০ ভাগ জেলেরা মাছ শিকার করতে পারে। আমরা তাদের নিবৃত করতে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করছি। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার মিটার জাল আটকের পর পুড়িয়ে দিয়েছি। ৫ জনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত জেল দিয়েছেন। নদীতে মা ইলিশ শিকারের মহোৎসব কথাটি সঠিক নয়।

 

ইউএনও মো. বশির গাজী বলেন, আমরা অভিযান আরো জোড়ালো করতে শনিবার জেলা থেকে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনেছি। আশা করছি অভিযান আগের চেয়ে কঠোর হবে।

 

উল্লেখ্য, সরকার গত ১২ অক্টোবর থেকে মা ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং এ নিষেধাজ্ঞা আগামী ২ নভেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version