বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার ফলে ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু দীর্ঘ ১ মাস ১৬ দিন পর ভেসে উঠেছে। এতে পর্যটন কর্তৃপক্ষ সেতুতে আগের দেয়া পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এরই মধ্যে পর্যটকরা ঝুলন্ত সেতুতে প্রবেশ করেছে।
সেতুটি আগের মতো দেখতে পেয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেন। অন্যদিকে পর্যটন করপোরেশনের আশা, পানি কমে যাওয়ায় ঝুলন্ত সেতুটি আবারও ভেসে ওঠায় নতুন করে ব্যবসার প্রসার করা সম্ভব। দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভ‚মি হ্রদ, পাহাড় ও ঝরনার মিলন মেলার জেলা রাঙ্গামাটি। অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতি বছর এই জেলায় দেশি-বিদেশি কয়েক লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে থাকেন।
রাঙ্গামাটিতে আগত পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় থাকে পর্যটন করপোরেশনের ঝুলন্ত সেতু। পাহাড়ের দুই দ্বীপ ও প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে আশির দশকে তৈরি করা হয়েছে ঝুলন্ত সেতু। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটিতে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় ডুবে যাওয়া ‘সিম্বল অব রাঙ্গামাটি’ খ্যাত ঝুলন্ত সেতু।
সেতু ডুবে যাওয়ায় আসা দর্শনার্থীরা মন খারাপ করে চলে যায়। গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ঝুলন্ত সেতু বন্ধ করে দেয়া হয়। ১ মাস ১৬ দিন হ্রদের পানিতে ডুবে থাকার পর আবারও পযটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে এই ঝুলন্ত সেতু। পর্যটন বোট ঘাটের ইজারাদার রমজান আলী জানান, কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় সঙ্গে সঙ্গে প্রতি বছরই সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়।
এতে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যাওয়ায় ঝুলন্ত সেতু পারাপারের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে করে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়ে। আর পর্যটক না আসায় দেড় মাসেরও বেশি সময় পর্যটকবাহী বোটগুলোর চালকরা ঘাটে বসে দিন পার করতে হয়েছে। এতে অতি কষ্টে দিন পার করেছে। তবে সেতুটি ডুবে থাকার কারণে ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছে তা এবার শীত মৌসুমে পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
ঝুলন্ত সেতুর টিকিট কাউন্টার মো. সোহেল জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় ঝুলন্ত সেতুটি হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। এতে ঝুলন্ত সেতু পারাপারের টিকিট বিক্রি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। ঝুলন্ত সেতুটি আবারও ভেসে উঠায় পর্যটন কর্তৃপক্ষ পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার নেয়ায় টিকিট বিক্রি আবারো শুরু করা হয়েছে।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক অলোক বিকাশ চাকমা জানান, হ্রদের সর্বোচ্চ পানির স্তর ১০৯ ফুট থাকলেও হ্রদে ১০৫ ফুট পানি হলেই পর্যটন এই ঝুলন্ত সেতুটি ডুবে যায়। এ বছরও হ্রদে পানি বাড়ায় ৩ সেপ্টেম্বর সেতুটি ডুবে যায়।
হ্রদের পানি কমায় ১ মাস ১৬ দিন ডুবে থাকার পর আবারও ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতুটি। আর সেতুটি আবারও ভেসে উঠায় সেতুটিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, রং করাসহ প্রাথমিক মেরামত কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেতুতে পর্যটক প্রবেশে দেয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝুলন্ত সেতুটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে যায়। কিন্তু ঝুলন্ত ব্রিজটি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান করা হয়নি। তাই এই ঝুলন্ত ব্রিজটি প্রতি বছর যাতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে না যায় এর জন্য নতুন করে সংস্কারের দাবি জানিয়েছে পর্যটকরা। শীত মৌসুমে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাঙ্গামাটি তেমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য