-->
শিরোনাম

দ্বিতল ভবনে ছাদবাগান

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
দ্বিতল ভবনে ছাদবাগান
পাইকগাছায় নিজস্ব ছাদবাগানে প্রধান শিক্ষক খালেদা খাতুন

বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বাড়ির ছাদে বাগান করা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরনের বাগান দেখা যায়। পরিকল্পিতভাবে উদ্যোগ নেয়া হলে বাড়ির ছাদে যেকোনো গাছ, এমনকি শাক-সবজিও ফলানো সম্ভব। এসব বাগান করে সফলতাও পাচ্ছেন অনেকে। শখ থেকে হয়ে উঠছে বাণিজ্যিক চিন্তাধারাও।

 

এমন একজন শখের ছাদ বাগানি খুলনার পাইকগাছার প্রধান শিক্ষক খালেদা খাতুন। তিনি তার নিজ বসতবাড়ির দ্বিতল ভবনের ছাদে বিভিন্ন প্রকারের ফল, ঔষধি, সবজি ও ফুলের চাষ করেছেন। তার ছাদবাগান দেখে এলাকার অনেকেই ছাদবাগান করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষক খালেদা খাতুন পাইকগাছার গদাইপুর ইউনিয়নের ২৬নং মানিকতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। পেশায় শিক্ষক হলেও বাগান করার প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। ছোটবেলার শখকে তিনি একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

 

১৯৯৭ সালের ২৯ জুন থেকে অদ্যাবধি পৌর সদরের বান্দিকাট গ্রামে খালেদা খাতুন তার পরিবারকে নিয়ে ওই ভবনে বসবাস করছেন। নিজ বসতবাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা আশপাশে তেমন ফসলি জমি না থাকায় ছাদে দুই একটা গাছ লাগিয়ে বাগান করা শুরু করেন। বসতবাড়ির দ্বিতল ভবনের ছাদকে এখন তিনি জীবন্ত বাগানে পরিণত করেছেন।

 

ছাদের কোথাও তিনি লাগিয়েছেন- কমলা, মাল্টা, আপেল, কদবেল, বেদানা, লিচু, আমলকি, সিডলেস কাগুজি লেবু ও চায়না কাগুজি লেবু, ড্রাগন, আপেল,আজোয়া সৌদি খেজুর, বারোমাসি আমড়া, বল সুন্দরী কুল, চায়না পেয়ারাসহ বিভিন্ন প্রকার ফলের গাছ। কোথাও লাগিয়েছেন- পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, করলা, শসা, কাকুড়, ঢেঁড়স, লাল শাক, পালংশাক, মূলা, ওলকপি, লাউ, শিম, কয়েক প্রজাতির মরিচসহ অনেক ধরনের সবজি। আবার কোথাও লাগিয়েছেন- দোপাটি, রঙ্গন, জুঁই, হাসনাহেনা, গোলাপ, জবা, গাঁদা, রজনীগন্ধা, লজ্জাবতী, ক্যকটাস, বনসাই বটগাছ, নীল অপারজিতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ।

 

ছাদের কোনো অংশে আবার লাগিয়েছেন পাথর কুঁচি, কাল মেঘ, তুলসী, ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রক গাছসহ বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ। সবজি, ফল আর ফুলে ভরে গেছে ছাদের সমস্ত অংশ। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো ছাদ, নাকি সবুজ ফসলের মাঠ। সব ধরনের সবজি ও ফল শুধুমাত্র জৈবসার ব্যবহার করেই উৎপাদন করছেন শিক্ষক খালেদা খাতুন। উৎপাদিত সবজি ও ফল নিজের পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত ফল ও সবজি আত্মীয়-স্বজনের মাঝে বণ্টন করেন বলেও তিনি জানান।

 

এ ব্যাপারে শিক্ষক খালেদা খাতুন বলেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে করোনাকালে আমার বিদ্যালয় ছুটি থাকায় ওই সময় থেকে অনেক গাছ লাগিয়ে ছাদবাগান গড়ে তুলেছি। ছোটবেলা থেকেই বাগান করা আমার শখ। আমার বাড়ির সঙ্গে তেমন ফসলি জায়গা না থাকায় ছাদে বাগান করা শুরু করি। প্রতিদিন ভোর ৫টার দিকে এবং স্কুল থেকে ফিরে বিকালে এক/দেড় ঘণ্টা করে বাগানের পরিচর্যার কাজ করি।

 

গত ৩/৪ বছরের ব্যবধানে ছাদ ছেয়ে গেছে সবজি ও ফল-মূলে। আমার পরিবারের চাহিদা পূরণ করে অনেক সবজি ও ফলমূল অতিরিক্ত থেকে যায়। প্রতিদিন লোকজন যখন আমার বাগান দেখতে আসে তখন খুব ভালো লাগে। ভবিষ্যতে ছাদে ড্রেনেজ সিস্টেম ও বাড়ির সামনে বড় পরিসরে বাগান করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ওই শিক্ষক।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি খালেদা খাতুনের ন্যায় দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ছাদে বাগান করার মতো নানন্দিক কাজকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এতে নিজে ও তার পরিবারসহ সমাজ উপকৃত হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version