গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার সবজি, মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়সীমার বাইরে। দাম লাগামহীন, ঊর্ধ্বমুখী। এতে নিম্ম আয়ের মানুষের মধ্যে হাঁসফাঁস বেড়েছে। কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানের দ্রব্যাদি যেন সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসছেই না। উপজেলার জামালপুর বাসাইর বাজার, দোলান বাজার, নরুন বাজার, নাগরী বাজার, আওড়াখালি বাজারসহ কালীগঞ্জের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছ-মাংস-সবজিসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়তি থাকায় কেনাকাটায় হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা।
কালীগঞ্জ বাজারের স্বনামধন্য হোটেল ব্যবসায়ী কাউন্সিলর বাদল হোসেন ভূইয়া বলেন, বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, চিচিঙা ৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, গোল আলু পাল্লা ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে হোটেলে খাবারের মূল্য বৃদ্ধি না করে পারছি না।
বক্তারপুর ইউনিয়নের ফুলদী বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মো. নাজমুল ইসলাম জুয়েল জানান, এই বাজারে অত্র অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা প্রচুর পরিমাণে তরিতরকারি আমদানী করলেও নিত্যপণ্যের দাম কমেনি। তবে কৃষকের নিকট থেকে পাইকাররা তরকারি ক্রয় করে সকল জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে দ্রব্য সামগ্রী সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে।
তিনি আরো জানান এই বাজারে প্রতিদিন সকালে গাভীর দুধের বাজার বসে। প্রতি কেজি গড়ে ৬০ হতে ৭০ টাকা দরে দুধ পাওয়া যায়। এখান হতে প্রায় ১০ মণ দুধ রাজধানী ঢাকা শহরে পাইকারদের মাধ্যমে সরবরাহ হয়।
সরেজমিনে জানা যায়, কালীগঞ্জ পৌর বাজারে দাম বেড়েছে মাছ, মুরগি, ডিম, কাঁচামরিচসহ বিভিন্ন সবজির। বাজারে আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা, দেশি আদা ৩৮০ টাকা, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চীনা রসুন ১৬০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫৫ টাকা, প্যাকেট ময়দা ৭০ টাকা, খোলা চিনি ১৩৫ টাকা, প্যাকেট চিনি ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা দানার মসুর ডাল ১০৫ টাকা ও ছোট দানার মসুর ডাল ১৪০ টাকা কেজি নেয়া হচ্ছে।
পৌর এলাকার মুরগি ব্যবসায়ী শাজাহান মিয়া জানান, ফার্মের মুরগির দামও বেড়েছে। সোনালি মুরগির দাম ৩২০ টাকা, ব্রয়লার ১৮০ টাকা ও কক বা লেয়ার ৩৩০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি হালি ডিম এখন ৫৫ টাকা। গরুর মাংসের দাম অপরিবর্তীত রয়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা। আর খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১’শ থেকে ১২’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের দামও চড়া। ইলিশ ১ হাজার টাকা, বড় রুই ও কাতল প্রতি কেজি ৩৮০-৪২০ টাকা, বড় তেলাপিয়া মাছ ২০০-২২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ টাকা, চাষের শিং মাছ দেশি ৫০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা, পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকা, চিংড়ি (ছোট) ৬০০ টাকা, চিংড়ি (বড়) ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তুমলিয়া ইউনিয়নের সোম বাজার এলাকার খুচরা মুদি দোকানদার মো. এমরান হোসেন বলেন, মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে স্থানীয় প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করলে দ্রব্যমূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য