-->
শিরোনাম

সর্তা খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে ব্রিজ, কমবে দুর্ভোগ

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
সর্তা খালের ওপর নির্মিত হচ্ছে ব্রিজ, কমবে দুর্ভোগ
শুষ্ক মৌসুমে রাউজানের সর্তা খাল হেঁটে পার হচ্ছেন কৃষক

বহু বছর থেকে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে থাকা মানুষের জন্য রাউজানের সর্তা খালের ওপর এখন নির্মিত হচ্ছে হচ্ছারঘাট ব্রিজ। প্রতিদিন এই খালের পানি হেঁটে পার হয়ে আসছিলেন রাউজান ফটিকছড়ি উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাউজান ফটিকছড়ির বুক চিঁড়ে বহমান পাহাড়ি এক স্রোতসিনী খাল সর্তা। এই খালের দুই পাড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে নানা জাতের মৌসুমী ফলমূল উৎপাদন করে কৃষকরা। দুটি উপজেলার খানিকটা দুর্গম এলাকা হিসেবে পরিচিত রাউজানের হলদিয়া ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড় পাদদেশের গ্রাম হচ্ছারঘাট ও ফটিকছড়ি উপজেলার খিরাম আর ধর্মপুরের কিছু গ্রাম।

 

সর্তা খালের কারণে বিভক্ত হয়ে থাকা দুপাড়ের মানুষের মধ্যে আত্মীয়তা ও জমি জমার এপার ওপার চাষাবাদের সম্পর্ক। খালের দুই পাড়ে বিভক্তি রেখা টেনে রাখা সর্তার কারণে একটু ছেদ পড়েনি দুই উপজেলার মানুষের সম্পর্কে। সর্বশেষ এটির বাস্তবায়নে রূপ দিয়েছেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী।

 

ফটিকছড়ির কৃষক নুরুল আলম বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে এপার ওপারের মানুষ খালের পানি হেঁটে পার হয়ে উৎপাদিত ফলমূল বিক্রির জন্য আনা-নেয়া করে আসছে। এখন হচ্ছাঘাটে ব্রিজ নির্মাণ হচ্ছে এমন সংবাদে এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।

 

হচ্ছাঘাট এলাকার বাসিন্দা মাওলানা দিদারুল আলম জানান, তিনি ফটিকছড়ির খিরাম এলাকায় একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। মানুষের যোগাযোগ দুর্ভোগের বর্ণনা দিয়ে বলেন, বাপ-দাদার আমল থেকে হচ্ছারঘাটে সর্তা খালের এপার ওপারের মানুষ যোগাযোগ করে হাঁটু সমান পানি পার হয়ে। খালের পানিতে হেঁটে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফলমূল এপার ওপাড় বিক্রির জন্য আনা-নেয়া করে আসছে। অনেক কৃষকের ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে যায়।

 

রাউজান হলদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন জানান, সর্তারকুল হচ্ছারঘাটের দুই পাড়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে মৌসুমি ফলমূল উৎপাদিত হয় সারা বছর। রাউজানের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী এই এলাকার কৃষিজীবদের উৎপাদিত ফসল দ্রুত বাজারজাত করা সহজতর ও সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ব্রিজ নির্মাণ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে তিনি দুই উপজেলার মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে দিচ্ছেন।

 

হচ্ছাঘাট ব্রিজের প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মোহাম্মদ সেকান্দর হোসেন বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এই ব্রিজটি নির্মাণ করছেন।

 

হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, দুর্ভোগকবলিত হচ্ছারঘাটের উভয় পাড়ের মানুষের জন্য সুসংবাদ হচ্ছে এখানে ব্রিজ করে দিচ্ছেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। আগামী ১৩ নভেম্বর ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি। এখন থেকে দুই পাড়ের মানুষের মাঝে আনন্দ উৎসব শুরু হয়েছে।

 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম এই ব্রিজটি সম্পর্কে বলেন, হচ্ছারঘাট মূল ব্রিজটির দৈর্ঘ্য হবে ৪৫০ মিটার, দুই পার্শ্বে এ্যাপ্রোজ সড়ক থাকবে ৩২০ মিটার। নির্মাণ ব্যয় হবে ২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। উৎসবমুখর পরিবেশে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুই পাড়ের মানুষ।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version