-->
শিরোনাম

ইটভাটায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ, হতাশ কৃষক

রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
ইটভাটায় ব্যাহত হচ্ছে চাষাবাদ, হতাশ কৃষক
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটভাটা

দেশের শস্যভান্ডার খ্যাত চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিল। বিলের তিন ফসলি উর্বর জমিতে ধান উৎপাদন হয়। খাদ্য উৎপাদনে জাতীয় কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এই বিলের ফসল। প্রায় ৭ হাজার একরের এই বিলে একটি ইটভাটার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। এক দশকের বেশি সময় ধরে সম্ভাবনার ফলন পাচ্ছে না কৃষক। এতে হতাশ হয়ে পড়েছে কৃষকরা।

 

বিলের গুমাই মৌজায় প্রায় ৫০ একরের উর্বরা জমি জুড়ে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অবৈধভাবে এখানে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। সরকারি অনুমতি এবং পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন প্রক্রিয়াধীনকে বৈধতার লাইসেন্স হিসেবে ব্যবহার করে কারচুপির আশ্রয়ে বছরের পর বছর রহস্যজনকভাবে এই ইটভাটা চলে আসছে। তাছাড়া বিলের বিভিন্নস্থানে অবাধে গড়ে উঠা স্থাপনায় গুমাই বিলের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছিল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গুমাই বিল রক্ষায় ইটভাটাসহ সকল প্রকার স্থাপনা নির্মাণের উপর রাঙ্গুনিয়া উপজেলা প্রশাসন গত বছর ২০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।

 

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিযান চালিয়ে গুমাই বিরের চন্দ্রঘোনা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি পাকা স্থাপনার কাজ বন্ধ করে দেয়। কৃষি জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। এটি করলে শাস্তির বিধান রয়েছে। প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে মর্মে বিল বোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিলের চারদিকে বিভিন্নস্থানে এই গণবিজ্ঞপ্তির বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।

 

চাষাবাদে চলমান পরিবেশের প্রতিক‚লতা বন্ধের প্রশাসনিক এই হস্তক্ষেপে গুমাই বিলে চাষাবাদে প্রাকৃতিক অনুকূল পরিবেশ আসবে বলে কৃষকের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে। কিন্তু প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে এ বছর রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলে আবারো শুরু হয়েছে একটি ইটভাটার কার্যক্রম। এতে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, গুমাই বিলে বিশাল এলাকাজুড়ে কেবিএম নামের ইটভাটা। ধানী জমিতে ব্যাপকহারে টপসয়েল কেটে এবং বড় বড় পুকুর কেটে মজুদ করা মাটি দিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। ইটভাটার মালিক নবীর হোসেন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অনুমতির আবেদন করে যথারীতি ইট তৈরির কাজ শুরু করেছি।

 

চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিচ আজগর জানান, গুমাই বিলে ইটভাটার কারণে কৃষি ছাড়াও ইট বোঝাই ভারি গাড়ির চলাচলে এলাকার দরগাহ সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে। বিলে চাষাবাদ এবং লোকালয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।

 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউলগনি ওসমানি বলেন, উচ্চ আদালতে ইটভাটা বন্ধের আদেশ হয়েছে। গুমাই বিলে ইটভাটা উচ্ছেদ হবে। আর কোনো ইটভাটা স্থাপন, কৃষি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ এবং টপ সয়েল কাটার খবর পেলেই জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version