-->
শিরোনাম

মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য

শেরপুর প্রতিনিধি
মাচায় তরমুজ চাষে সাফল্য
শেরপুরে নিজ তরমুজ খেতে কৃষক আমিনুল ইসলাম

মৌসুম ছাড়াই বাণিজ্যিকভাবে মাচায় তরমুজ চাষ করে সফল কৃষক আমিনুল ইসলাম। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক কৃষক পরিকল্পনা করছেন অসময়ে তরমুজ চাষের। কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) অনুযায়ী, তরমুজ সাধারণত এপ্রিল থেকে মে মাসে ওঠে। এটাই তরমুজের প্রধান মৌসুম, কিন্তু সম্প্রতি এ দেশের বাজারে এ সময় ছাড়া অন্য সময়েও তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। অনেকে এর নাম দিয়েছেন ‘বারোমাসি তরমুজ’।

 

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় নলকুড়া ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম প্রথমবারের মতো বারোমাসি তরমুজ চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি বাড়ির পাশে ১২ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন হলুদ ও লাল রঙের তরমুজ। তার মাচায় ঝুলছে ছোট-বড় আকারের রসাল এ ফল। আর অসময়ে এ ফলের বেশ চাহিদাও রয়েছে বলে জানান তিনি।

 

তরমুজচাষি আমিনুল ইসলাম জানান, এক দিন সবজির বীজ কেনার জন্য বীজের দোকানে যান তিনি। পরে বীজের দোকানদার তাকে বলেন, ‘অসময়ে রঙিন তরমুজ চাষ করতে। তারপর উপজেলা কৃষি অফিসে এ ব্যাপারে জানতে গেলে, সেখান থেকেও তাকে এ চাষের কথা বলা হয়। সেখান থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় তরমুজ চাষ শুরু করেন তিনি। তিনি এই জমিতে আগে সবজি চাষ করতেন। আগে সবজি চাষ করে যে লাভ হতো তরমুজ চাষ করে এর চেয়ে বেশি লাভ হবে আশা তার।’

 

তিনি বলেন, ‘এই তরমুজ চাষে আমার খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকার মতো তরমুজ বিক্রি করেছি। আশা করি, যে ফল আসছে এতে আরও এক লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে। আমার চাষ দেখে অনেকে আসছে পরামর্শ নিতে।’

 

আগে বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ করতেন না কৃষক, কিন্তু এখন বর্ষাকালেও মাচায় তরমুজ চাষ হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে বীজ যেন পচে নষ্ট না হয়, সে জন্য উন্নতমানের পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে বীজ অঙ্কুরোদগম হয়ে চারা বেরিয়ে আসে।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আমিনুল ইসলামের খেতের মাচায় অনেক তরমুজ ঝুলছে। আমিনুল ইসলাম জানান, প্রতিটি তরমুজ তিন থেকে চার কেজি ওজনের। লাল ও হলুদ বর্ণের এ তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু। তরমুজের ফলন দেখে আশপাশের কৃষকরাও উৎসাহিত হচ্ছেন।

 

আগ্রহী কৃষক রফিকুল বলেন, ‘আমার ১০ শতাংশ জমি আছে, সেখানে সামনে এ রকম তরমুজের বাগান করমু ভাবতাছি। আমিনুল ভাইয়ের বাগানটা অনেক সুন্দর হইছে। বাজারে চাহিদাও অনেক।’

 

পাশের গ্রামের করিম মিয়া বলেন, ‘আমরা তো এলাকায় খালি সবজি আর ধান চাষ করি। কিন্তু এখন তো দেখলাম তরমুজও হয়; আবার লাভও ভালো। সামনে আমার কিছু জমিতে তরমুজের বাগান করমু।’ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বারোমাসি এই তরমুজের চারা রোপণের ১৫ থেকে ১৬ দিন পর গাছে ফুল আসা শুরু করে। এরপর ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে ফল পরিপক্ব বা খাওয়ার উপযুক্ত হয়।

 

ঝিনাইগাতী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হুমায়ুন দিলদার বলেন, আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি নতুন নতুন জিনিস চাষাবাদের জন্য।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version