-->

জলাবদ্ধ জমিতে পানি ফল চাষ, ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
জলাবদ্ধ জমিতে পানি ফল চাষ, ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

সিরাজগঞ্জের চলনবিল অঞ্চলে মৌসুমি পানিফল চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। এরই মধ্যে লাভজনক এই ফল চাষ করে অনেক চাষি পরিবারে সুখেরদিন ফিরছে। এই চলনবিলের বিভিন্ন খাল-বিল-জলাশয়, পতিত জমিতে এখন শোভা পাচ্ছে পানিফলের। জলাশয়ে চাষ হওয়া পানিফল স্থানীয় চাষিদের কাছে পানি শিঙাড়া নামেও পরিচিত। নিচু এলাকার বিল-জলাশয়ে মৌসুমি ফসল হিসেবে পানিফল চাষ হয়।

 

পানিফল বিক্রির জন্য গুরুদাপুর উপজেলার চাঁচকৈড় হাট, নাটোরের সিংড়া বাজার, তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ হাট, কালিবাড়ি হাট, নিমগাছি হাট, রানীরহাট, গুল্টাবাজার, কাটাগাড়িসহ বিভিন্ন হাটবাজারে কেনাবেচা হয়। লাল রঙের হাইব্রিড পানিফল প্রতি মণ ৪৫০ টাকা, সবুজ রঙের তাজা পানিফল ৬৫০ টাকা, পাকা পানিফল ৭৫০ টাকা এবং কয়েক দিন আগে তোলা কালো রঙের পানিফল মণ ৪০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

 

সিংড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এ উপজেলায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পানিফল চাষ হচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এ ফলের চাষ বাড়ছে। সিংড়া পৌরসভা, কলম, শেরকোল, তাজপুর, ও রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নে পতিত ও নিচু জমিতে চাষ হচ্ছে পানিফল।

 

সিংড়া পৌর শহরের চকসিংড়া বিলে নিচু জমিতে ছয় বছর ধরে পানিফল চাষ করছেন সাইফুল ইসলাম ভোরের আকাশ কে বলেন, ছয় বছর আগে অল্প জায়গায় পরীক্ষামূলক চাষ করে ভালো ফলন পাই। এ বছর দুই বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছি। খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। পাইকারি প্রতি মণ ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। আশা করি এ বছর ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারব।

 

চাষি আব্দুর রশিদ ভোরের আকাশ কে বলেন, পানিফল চাষে খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় আমাদের এলাকায় প্রতি বছর চাষ বাড়ছে। পানিফল চাষে অনেকের সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। এবার ফলন ও বাজারমূল্য দুটোই ভালো আছে।

 

চাঁচকৈড় বাজারের পানিফলের ব্যাপারী শফিকুল ইসলাম ভোরের আকাশ কে বলেন, এক মাস আগে মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাকা পানিফল ১ হাজার ৮০০ এবং লাল রঙের পানিফল প্রতি মণ ১ হাজার টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে। এখন আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।

 

চাষি রায়হান আলী ভোরের আকাশ কে বলেন, প্রতি মণ পানিফল ৪০০ টাকার কমে বিক্রি করলে চাষিদের লোকসান হবে। গত বছর মৌসুমের শেষেও এই বাজারে প্রতি মণ পানিফল মানভেদে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছে।

 

সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খন্দকার ফরিদ ভোরের আকাশ কে বলেন, পতিত থাকা বিল-জলাশয়ে চাষিরা পানিফল চাষ করছেন। এতে খরচ ও পরিশ্রম কম, লাভ বেশি। ফলে এ পেশায় ঝুঁকছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ সব সময় চাষিদের পাশে রয়েছে।

 

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ভোরের আকাশ কে বলেন, চলনবিল একটি বৃহত্তর এলাকা। বিলের বিভিন্ন খাল-জলাবদ্ধ জমিতে পানি ফল থাকতে পারে। তবে কেউ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছে এমন কোনো তথ্য আমাদের অফিসে নেই।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version