-->
শিরোনাম

সীতাকুণ্ডে মৃৎশিল্পের দুর্দিন প্লাষ্টিক ব্যবহারে বিপর্যস্ত পরিবেশ

অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন, সীতাকুণ্ড
সীতাকুণ্ডে মৃৎশিল্পের দুর্দিন
প্লাষ্টিক ব্যবহারে বিপর্যস্ত পরিবেশ
ক্যাপশান : পূর্বপুরুষদের পেশায় আঁকড়ে থাকা পাল পাড়ার কুমারদের তৈরী সামগ্রী

কালের আবর্তে ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে সীতাকুণ্ডর ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। বহুমুখী সমস্যা আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে সংকটের মুখে মৃৎকুঠির শিল্প। উপজেলার মহাদেবপুর, কুমারপাড়া, বড় দারোগারহাট, বহরপুর, মহালঙ্গা, বাড়বকুণ্ড ও বাঁশবাড়ীয়ায় এক সময় প্রায় ৩শ’ পরিবার মৃৎ কুঠির শিল্পের সাথে জড়িত থাকলেও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা, শিল্পের উন্নয়ন ও প্লাষ্টিকসহ নতুন নতুন সামগ্রীর প্রসারে অন্যান্য এলাকার মত উপজেলায় প্রায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎকুঠির শিল্প।

 

সরেজমিনে দেখা যায় পূর্বপুরুষদের পেশায় আঁকড়ে থাকা পাল পাড়ার সোহাগী রানী, গীতা রানী ও মনোরঞ্জন পালসহ অনেকেই মাটির সামগ্রী তৈরি ও রোদে শুকাতে ব্যস্ত সময় পার করছে। কুমিরার বাসিন্দা চট্টগ্রাম জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোঃ খালেদ শাহনেওয়াজ ভোরের আকাশকে বলেন, মেলামাইন, প্লাষ্টিক কিংবা আধুনিকতার ছোঁয়ায় ক্রেতাদের চাহিদার পরিবর্তনে সীতাকুণ্ডে দুর্দিনে মৃৎশিল্প সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো।

 

বর্তমান বাজারে আগের মত মাটির তৈরি জিনিসপত্রের তেমন চাহিদা নেই। ক্রেতারা মাটির জিনিজপত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলায় এ পেশায় যারা জড়িত ও জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন মৃৎশিল্প তাদের সংসার পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ আবুল হাসান সাহাব উদ্দিন ভোরের আকাশকে বলেন, ক্ষতিকর প্লাষ্টিক সামগ্রীর পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব মৃৎশিল্প রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।

 

মৃৎ কুঠিরশিল্প ব্যবসায়ী নারায়ন নাথ ভোরের আকাশকে জানান, ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি না হওয়ায় কুমিল্লার পদুয়া বাজার ও ফেনীর ছাগলনাইয়া থেকে নিয়মিত মৃৎশিল্প সামগ্রী সীতাকুণ্ড বাজারে আমদানী করতে হয়। থানা সংলগ্ন পাল বাড়ীর খোকন পাল ভোরের আকাশকে বলেন, পারিবারিকভাবে প্রায় ৫৮ বছর যাবৎ আমরা মৃৎ কুঠির শিল্পের সাথে জড়িত। সুর্নিপুণ হাতে মাটি দিয়ে তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, কলসি, থালা-বাটি, সরা-বাসন, বিক্রি করেই তাদের সংসার চলছে। ফুলের টব, মাটির কলস, মাটির পাতিল, মাটির প্লেট ও মাটির তাবার প্রতি ক্রেতাদের রয়েছে বিশেষ চাহিদা।

 

সীতাকুণ্ড পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বদিউল আলম বলেন, মৃৎশিল্প আমাদের ঐতিহ্য। মৃৎশিল্পের সাথে এখনো ঘুরছে উপজেলার প্রায় শতাধিক পরিবারের ভাগ্যের চাকা। সেই মৃৎশিল্পের এখন দুর্দিন চলছে। এক সময় নিজেদের পছন্দ মত তৈরি জিনিস পেতে ক্রেতাদের ভিড় করতে দেখেছি। বর্তমানে মেলামাইন প্লাষ্টিক কিংবা অন্যান্য শিল্প সামগ্রী স্বল্পমূল্যে বাজারজাত হওয়ায় মৃৎশিল্পের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version