-->
শিরোনাম
পরিবারগুলোতে আহাজারি

নিখোঁজ ২৫ জেলের সন্ধান এখনো মেলেনি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
নিখোঁজ ২৫ জেলের সন্ধান এখনো মেলেনি
ঘূর্ণিঝড়ে নিখোঁজ জেলে পরিবারের সদস্যরা আহাজারি করছেন

ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে পটুয়াখালী রাঙ্গাবালী উপজেলার ৩ ট্রলারসহ নিখোঁজ ২৫ জন জেলের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের ৬ দিন ধরে পরিবারগুলোতে চলছে কান্নার আহাজারি। সময় যতই পার হচ্ছে পরিবারের মধ্যে উৎকণ্ঠা বেড়েই চলছে।

 

শুক্রবার উপকূলে মিধিলি আঘাত হানে। এর প্রভাবে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া রাঙ্গাবালীর বড়বাইশদিয়া ইউনিয়নের বাবুল হাওলাদারের এফবি হিমু, মৌডুবি ইউনিয়নের দিদার মৃধার এফবি মায়ের দোয়া ও ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের হাসান জোমাদ্দারের এফবি হাসান নামের ৩টি ট্রলারের জেলেদের এখনও কোনো সন্ধান মেলেনি। এই ৩ ট্রলারে ২৫ জন মাঝি-মাল্লা রয়েছে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন।

 

নিখোঁজ জহির প্যাদার স্ত্রী ফাতেমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি আর কিছুই চাই না আমার স্বামীকে ফিরিয়ে এনে দেন। কোথায় আছে কেমন আছে কিছুই জানি না, এতদিন ধরে নিখোঁজ কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সন্ধান মেলেনি। তিনি না এলে আমার পরিবারসহ আমরা না খেয়ে মারা যাব’। নিখোঁজ হওয়া তামিমের (১৯) মা শহর ভানু সন্তানের জন্য প্রায় পাগল হওয়ার মতো অবস্থা। শহর ভানু চিৎকার করে বলছেন, ‘আমার ছেলের সন্ধানটুকু কেউ এনে দেন আমার মানিক আমার বুকে ফিরিয়ে দেন’।

 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিখোঁজ হওয়া ওইসব জেলেদের পরিবার ও স্বজনদের দাবি নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার।

 

কাড়ালিয়া মৎস্য সমিতির সভাপতি জহির হাওলাদার বলেন, আমরা প্রশাসন সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। নিখোঁজ হওয়া ট্রলার আর জেলেদের যদি একটু সন্ধান পাওয়া যায়। তবে ঝড়ের আঘাতে ট্রলারগুলো সুন্দরবন বা ভারতের পার্শ্ববর্তী এলাকার দিকে যেতে পারে।

 

উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আগাম বার্তা মৎস্যঘাটে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু জেলে অসচেতন হওয়ায় ঝড়ের কবলে পড়ে। আমাদের তথ্য মতে ৩টি ট্রলারের ২৫ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধানে কাজ করছে প্রশাসন।

 

রাঙ্গাবালী থানা পুলিশের ওসি নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, নিখোঁজ হওয়া জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। মালিকপক্ষও খোঁজাখুঁজি করছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের সন্ধান যেন পেতে পারি। আমরা সার্বক্ষণিক এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখছি।

 

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ৩টি মাছ ধরার ট্রলারসহ ২৫ জন জেলে নিখোঁজের অভিযোগ রয়েছে। কোস্টগার্ড ও নৌ বাহিনীর টিম নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে। সুন্দরবন অঞ্চলের মোংলা জোনে দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। কিন্তু তারা এই ২৫ জনের মধ্যে কেউ কিনা সেটা নিশ্চিত করা যায়নি। আমরা শনাক্ত করে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছি। এছাড়া জেলে পরিবারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version