ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তান্ডবে পাকা-আধাপাকা আমন ধানক্ষেত দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন শাকসবজি ও আগাম রবি ফসলের। এতে হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্ন এখন পানির নিচে।
এমনই একজন কৃষক মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়নের চরপালরদী গ্রামের মো. শাহীন রাঢ়ী। তিনি বুকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে চলতি বছরে প্রায় ১২০ শতাংশ জমিতে শসা ও লাউ চাষ করেছেন। তার বয়স এখন প্রায় ৫৫ বছর। পরিবারে রয়েছে তিন ছেলেমেয়েসহ সাত সদস্য। তিনিই সংসারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন। তার উপার্জনের টাকায় চলে তার সংসার।
শাহীন রাঢ়ী বছরের ১২ মাসই কৃষি কাজে ব্যস্ত থাকেন। তিনি এর আগে বেশ কয়েকবার সফল কৃষক হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছেন। তবে সবজির মধ্যে তিনি শসা ও লাউ উৎপাদন করেন বছরের ১২ মাসই।
এতে তিনি বছরে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা আয় করে থাকেন। তার এই উপার্জনে এক ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াচ্ছেন। আর এ লাউ ও শসা চাষ করেই আজ তিনি সফল ও স্বাবলম্বী একজন কৃষক হিসেবে সমাজে পরিচিতি। তিনি বর্ষাকালে ভাসমান লাউ ও বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ করে থাকেন।
প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরেও শাহীন রাঢ়ী বুকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে প্রায় ১২০ শতাংশ জমিতে শসা ও লাউ চাষ করেছেন। কিন্তু হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে তার এ সবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে। তার ও তার পরিবারের স্বপ্ন এখন পানির নিচে। এতে করে দুশ্চিন্তায় শাহীনের কপালে হতাশার ভাজ পড়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শাহীন রাঢ়ী কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি ঋণ করে প্রায় ১২০ শতাংশ জমিতে শসা ও লাউ চাষ করেছি। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে আমার স্বপ্ন এখন পানির নিচে চলে গেছে। আমি জানি না এখন আমি কীভাবে আমার সংসার চালাব।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির আঘাতে রোপা আমন, খেসারি, শাক-সবজিসহ বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এতে কৃষি খাতে সফল চাষি শাহীনসহ অন্য চাষিদের উপজেলায় প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে মাঠে জমে থাকা পানি দ্রুত সরাতে কাজ করার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য