-->
শিরোনাম

বরগুনার শুভ সন্ধ্যায় রাস উৎসব উদযাপন

বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার শুভ সন্ধ্যায় রাস উৎসব উদযাপন
রাস উৎসবে আসা পুণ্যার্থীরা সমুদ্র সৈকতে প্রার্থনায় মগ্ন

বরগুনার তালতলী উপজেলার শুভ সন্ধ্যা এলাকায় রাস উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে। আজ সোমবার সকালে সূর্যের আলো ফোটার আগেই শুভ সন্ধ্যা এলাকার শতশত সনাতন ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ সমুদ্র সৈকতে সমবেত হতে দেখা যায়। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাস উৎসবে আসা পুণ্যার্থীরা সূর্য দেবতাকে প্রনাম জানিয়ে ও উলুধ্বনি দিয়ে সাগরে পুণ্যস্নানে নেমে পড়েন।

 

পুণ্যলাভের আশায় এবং পরলোকে যাওয়া স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় সাগর পাড়ে প্রার্থনা করেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। পুণ্যার্থীরা মোম ও আগরবাতি জ্বালিয়ে অর্ঘ্যদান করেন গঙ্গাদেবীকে। পরে ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তালতলীর রাস উৎসব উদযাপন করা হচ্ছে।

 

এবারের রাস উৎসবে প্রায় শতশত পুণ্যার্থী, দর্শনার্থী ও পর্যটক এসেছে বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার সমুদ্র সৈকতে। রাস উৎসবকে ঘিরে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের উপস্থিতিতে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত মুখর হয়ে ওঠেছে।

 

এছাড়া রাস মেলায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের জন্য। তালতলীর শুভ সন্ধ্যা এলাকার রাস উৎসব এখন সর্বজনীন লোকোৎসবে পরিণত হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ অন্য ধর্মাবলম্বীরাও এ উৎসব উপভোগ করতে আসেন। এর আগে রাস উৎসবকে ঘিরে রোববার রাতে তালতলীর শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির ও বাংলাদেশ সেবাশ্রম প্রঙ্গণে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।

 

রাস উৎসব কমিটির সভাপতি রতন বিশ্বাস বলেন, এবার শতশত নারী-পুরুষ শুভ সন্ধ্যা এলাকায় আয়োজিত রাস উৎসবে অংশগ্রহন করতে এসেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সহ সবার সহযোগিতায় এবারের উৎসব সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হচ্ছে।

 

কি হয় এই রাস উৎসবে জানতে চাইলে রতন বিশ্বাস বলেন, রাস উৎসবে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসেন পুণ্যার্থীরা। তারা সাগরের সামনে নির্জনে কৃষ্ণপূজার সঙ্গে দেবতা নীলকমল আর গঙ্গাদেবীর আরাধনায় মগ্ন হন। পাপমোচন করেন সমুদ্রস্নানের মাধ্যমে। সূর্যোদয়ে পানিতে ভাসিয়ে দেন ফল-ফুল। এরপর ঢাক-ঢোলক-কাসা-মন্দিরা বাজিয়ে ভজন-কীর্তন করতে থাকেন চারপাশে। পূজা-অর্চনার ফাঁকে সূর্যাস্তের পর সাগরকে সাক্ষী রেখে আকাশের বুকে উড়িয়ে দেওয়া হয় ফানুস। সন্তানহীন ধর্মনুরাগী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা শুভ সন্ধ্যা এলাকায় রাস উৎসবের সময়ে মানত করেন এবং মেলায় এসে মানতকারীরা আনুষঙ্গিক অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করে থাকেন। মেলায় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

 

নিশানবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের এই উৎসবে শুভ সন্ধ্যা এলাকায় পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করছি।

 

তালতলী থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ন পরিবেশে উৎসব পালনের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

 

তালতলী ইউএনও সিফাত আনোয়ার তুম্পা বলেন, প্রতিবছর শুভ সন্ধ্যা এলাকায় অত্র অঞ্চলের সনাতন ধর্মের মানুষ পূর্ণ লাভের আশায় সমবেত হন। এছাড়াও অন্যান্য ধর্মের মানুষ এই দিনে উৎসব উপভোগ করতে আসেন।

 

তিনি আরো বলেন, এবছর উৎসবমূখর ধর্মীয় ভাবগার্ম্ভীজের মধ্যে দিয়ে পুর্ণার্থীরা অংশগ্রহন করছেন। তালতলী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস উৎসব সফল করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version