-->

বালু তোলার মচ্ছবে বালু খেকোরা

পাবনা প্রতিনিধি
বালু তোলার মচ্ছবে বালু খেকোরা
চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুরে পদ্মা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে।  প্রভাবশালীদের নেতৃত্বে বালু তোলার এ মচ্ছব চলছে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তীর ঘেঁষে বালু তোলায় শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বালু তোলার প্রতিবাদ করলে উল্টো হয়রানি করা হয়। 
 
 
এ বিষয়ে কথা বলতে দোগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘চরতারাপুরে কেউ বালু তুলছে না। 
 
 
চরতারাপুরের ভাদুরিয়াডাঙ্গী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে প্রকাশ্যে ১৫ থেকে ২০টি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু তোলা হচ্ছে। শতাধিক ট্রলারের মাধ্যমে বালু যাচ্ছে পাকশী, সুজানগর, কুষ্টিয়ার পাংশা, কুমারখালী, রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন স্থানে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ চলছে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের পাহারায়। কেউ প্রতিবাদ করলে দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি।
 
 
এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক বলেন, সুজানগর উপজেলার চেয়ারম্যান শাহিনুজ্জামান শাহিনের নেতৃত্বে অবাধে বালু তোলা হচ্ছে। ফলে নদীতে শুরু হয়েছে ভাঙন। প্রতিদিন বিঘা বিঘা ফসলি জমি বিলীন হচ্ছে। দ্রুত ঘৃণ্য এ কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
 
 
স্থানীয় কৃষক শাহীন খান  ভোরের আকাশকে জানান, বালু তোলার প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়। এরই মধ্যে অনেক কৃষককে আটকসহ হয়রানি করেছে পুলিশ। 
 
 
আরেক কৃষক সাইফুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও, নৌ-পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করেছি। এরপরও বালু তোলা বন্ধ হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে এলাকায় ফসলি জমি বলতে আর কিছু থাকবে না। আমরা কৃষকরা শেষ হয়ে যাব।’
 
 
পাবনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশারোফ হোসেন বলেন, সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে এখানে বহুদিন ধরেই বালু তোলা হচ্ছে। স্বার্থান্বেষী এ মহল দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। প্রশাসনকে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আমরা অবৈধভাবে বালু কেটে কৃষকের জমির ক্ষতি করতে দেব না।
 
 
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিদা আক্তার বলেন, কৃষকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। বালু উত্তোলনের খবর পেলেই প্রশাসনকে জানাতে বলা হয়েছে। কিন্তু এরপর তারা আর কিছু জানাননি। 
 
 
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী বলেন, ‘আন্দোলন-সহিংসতার কারণে নদীর দিকে সেভাবে নজর দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিষয়টি নজরে এসেছে। জেলা প্রশাসন, বিআইডব্লিউটিএ, নৌপুলিশের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 
 
 
ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version