-->
শিরোনাম

চাচীর সংগ্রামে সাইমার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন

মাদারীপুর প্রতিনিধি
চাচীর সংগ্রামে সাইমার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন

মাদারীপুরের শিবচরের পদ্মা নদীর ভাঙ্গন আক্রান্ত এক পরিবারের সন্তান সাইমা জামান। তবে অন্যদের মতো নদী ভাঙ্গনকেই মোকাবেলা করেননি তিনি বা তার পরিবার। জীবনের নিষ্ঠুরতম সব বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে সাইমা ৩ বছর বয়স থেকেই। সাইমা চলতি বছর শিবচর ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ থেকে এইচএসসিতে মানবিক বিভাগ থেকে অর্জন করেছে জিপিএ-৫।

 

জানা যায়, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্ত্তী বন্দরখোলার ইউনিয়নের মল্লিককান্দি গ্রামের মরহুম পান্নু মল্লিকের জমজ সন্তানের সাইমা জামান চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ ৫ অর্জন করেছে। সৌদি প্রবাসী বাবা পান্নু প্রবাসেই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ২০০৯ সালে। তখন সাইমা ও তার ভাই সিয়ামের বয়স ৩ বছর। এর ২ মাস পরই চাচা মিজু মল্লিকও মারা যান। সাইমার বয়স যখন ৫ বছর তখন মা চলে যায় অন্যের ঘরে। ৯ বছর আগে মারা যায় বৃদ্ধ দাদাও। তবু থেমে থাকেননি বিধবা চাচী মিরজান বেগম। নিজের ২ সন্তানের সাথে সাইমাদেরও সন্তানের মতো করেই বড় করতে থাকেন তিনি।

 

সাইমা রাজারচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে পায় জিপিএ ৪.৮৯। এরপর ভর্তি হন উপজেলার দত্তপাড়ার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজে। চাচাতো ভাই জাবেল মল্লিক ও চাচীর সহায়তা ছাড়া কলেজে ভর্তি ছিল মেয়েটির জন্য কল্পনা মাত্র। সাইমা গ্রামের ছোট ছোট শিক্ষার্থীদের মাসিক ৩০০ টাকা করে পড়িয়ে নিজের পড়ার খরচ ও কলেজে যাতায়াত ব্যবস্থা করতো।

 

পরে কলেজ কর্ত্তৃপক্ষ বাড়িয়ে দিয়েছিল সহযোগিতার হাত। তবে জিপিএ-৫ পেয়েও দুশ্চিন্তার ভাজ এখন সাইমা ও পরিবারের কপালে। কোচিং করবে কিভাবে; ভাল বিশ^বিদ্যালয়ে কিভাবে ভর্তি হবে; টাকার জোগান আসবে কোথা থেকে। এমন নানান প্রশ্ন ও শঙ্কা সাইমার পরিবারে।

 

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাফিজুল্লাহ বলেন, আমাদের কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরীর পরিবার বৃত্তির মাধ্যমে অনেক দরিদ্র মেধাবীদের সহায়তা করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার ব্যাস্থা করে দেন। আশাকরি সাইমার জন্য তারা ব্যবস্থা করবেন।

 

সাইমার মতো মেধাবীদের লেখাপড়া এগিয়ে নিতে সমাজের শিক্ষানুরাগী ও সমাজ হিতৈষীরা এগিয়ে আসবেন এমনটাই প্রতাশা মাদারীপুরবাসীর।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version