হবিগঞ্জের চুনারুঘাট প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় শহরের পাশেই মরা খোয়াই নদীর ব্রিজের দুই পারের সড়কে ফেলা হচ্ছে পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা। ফলে সড়কের পাশে ফেলা ময়লায় নদীতে তৈরি হচ্ছে ভাগাড়। আবার ভাগাড়ে আগুন দেয়ার কারণে ধোঁয়ায় এলাকায় বসবাসরত ও পথচারীরা শ্বাসকষ্টে ভুগছে।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানায়, পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণাচরণ পাইলট হাই স্কুলসংলগ্ন মরা খোয়াই নদীর ব্রিজের দুই পারে ও মুক্তিযোদ্ধা ভবনসংলগ্ন ব্রিজের দুই পারের সড়কে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। তারা গভীর রাতে পৌরসভার ভ্যানগাড়ি দিয়ে এই স্থানে ময়লা ফেলছেন।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে মরা খোয়াই নদীর কয়েক কিলোমিটার কচুরিপানায় ভরে গেছে। সেই সঙ্গে ময়লা-আবর্জনা পানিতে মিশে প্রতিনিয়ত হচ্ছে পানিদূষণ। পোকামাকড় ও মশার উপদ্রব বেড়েছে নদীতীরবর্তী এলাকায়। স্থানীয়রা নদীর কচুরিপানা অপসারণ ও দূষণ রোধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছে।
চুনারুঘাট মরা খোয়াই নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘একসময়ের খরস্রোতা খোয়াই নদীতে নৌকা চলত, জেলেরা মাছ ধরতেন। কিন্তু আজ এটি কালের আবর্তে মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। নদীতে মাছ নেই, ময়লা-আবর্জনায় পানি বিষাক্ত হয়ে পড়েছে। পৌরসভার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে এই নদী।
এলাকাবাসীর দাবী এই নদী পরিষ্কার করে আধুনিক পার্ক ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের। প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে রেমা-কালেঙ্গা, রানীগাঁও, সুন্দরপুর, মিরাশী, নালমুখ, বাসুল্লা, একডালাসহ উপজেলার লাখো মানুষ পৌর শহর দিয়ে যাতায়াত করেন। পাশাপাশি দক্ষিণাচরণ হাই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ বিভিন্ন কিন্ডার গার্টেন এর ছোট কোমলমতি শিশুরাও আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকরা আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন বাচ্চাদের স্বাস্থ্য নিয়ে। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নদীর ওপর সড়কের ব্রিজের দুই পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। পৌরসভার ময়লায় নদী ভরাট হচ্ছে। সড়ক দিয়ে চলাচলকারীদের হাত দিয়ে নাক ঢেকে স্থান অতিক্রম করতে হচ্ছে।
চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাম্মেল হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, ময়লা-আবর্জনার বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি এমনকি ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে। চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র সাইফুল আলম রুবেল বলেন, ‘পৌরসভার কোনো ময়লা এখানে ফেলা হয় না। কারা ফেলছে, ধরিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেব।’
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য