নীলফামারীর সৈয়দপুরে নির্বিচারে আবাদি জমির মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায় বা নতুন তৈরি বাসাবাড়িতে। জমির টপ সয়েল কাটায় উর্বরতা হারাচ্ছে মাটি। যার প্রভাব আবাদে পড়তে শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙালিপুর, বোতলাগাড়ি ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে প্রায় ৫০টির উপরে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। এরমধ্যে কামারপুকুর ইউনিয়নে রয়েছে ২৩টির ইটভাটা। এসব ইটভাটায় ইট তৈরির প্রয়োজনে দূর-দূরান্ত থেকে আবাদি জমির মাটি কেটে আনা হচ্ছে। এক শ্রেণির দালাল জমির মালিককে নানা প্রলোভন দেখিয়ে এসব মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের জমির মালিক একরামুল হক জানান, দুই থেকে তিন ফুট মাটি কাটার শর্তে জমি দেয়া হয় ইটভাটার মালিকদের। কিন্তু তারা এমনভাবে মাটি কেটে নিয়ে যায় সেখানে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়। ফলে পাঁচ থেকে ছয় বছর সেই জমিতে আর কোনো আবাদ হয় না। এভাবে মাটি কাটার কারণে আমাদের এলাকায় বৃষ্টি হলেই জমিতে পানি জমে থাকছে। ফলে কৃষি জমির আবাদ কমে যাচ্ছে।
উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের ইটভাটা এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন ভোরের আকাশকে জানান, ইটভাটার কারণে আমাদের এলাকায় আম, কাঁঠালসহ অন্যান্য ফল ও আবাদে ভালো সুফল পাচ্ছি না। ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে আম ও কাঁঠাল আকারে ছোট ও ফসলের আবাদ ভালো হচ্ছে না।
এদিকে ট্রাক্টরগুলো মাটি পরিবহনে কোনো নিয়মনীতি মানছেন না। ধুলো বালি উড়িয়ে সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করছে। এর ফলে রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ছে। পথচারী, হোটেলে, রেস্তোরাঁ খাবারে পড়ছে ধুলাবালি।
ইটভাটা মালিক ছাবেদুল ইসলাম, হারুণ-অর রশীদ ও ইকবাল হোসেন ভোলা জানান, কার্তিক মাসে মাটি সংগ্রহের মাধ্যমে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয়। ইট তৈরির জন্য বিভিন্ন এলাকার উঁচু জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকি। আমাদের এলাকার বেশিরভাগ ইটভাটা উঁচু চিমনি ব্যবহার করায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, আবাদি জমিতে ইটভাটা তৈরিতে ঘোর আপত্তি জানানো হলেও তা আর মানা হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি নিয়ে দিব্যি ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন মালিকেরা। নির্বিচারে জমির টপ সয়েল কাটায় জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। মাটিকাটা ও আবাদি জমিতে বাসাবাড়ি গড়ে উঠায় আবাদি জমির পরিমাণও কমছে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য