নওগাঁর নিয়ামতপুরের চারপাশে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়েছে প্রকৃতি। মৌমাছির মৌ মৌ গুঞ্জন আর সরিষা ফুলে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত রয়েছেন মৌয়ালরা। সরিষা ফুলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে মধু সংগ্রহের বাক্স বসিয়েছেন মৌচাষিরা।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার হেক্টর এবং লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে সরিষা আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৭৬৫ হেক্টর। আবাদকৃত জাত হচ্ছে বারি সরিষা ১৪, বারি সরিষা ১৫, বারি সরিষা ১৭, বারি সরিষা ১৮, বিনা সরিষা ৪, বিনা সরিষা ৯, বিনা সরিষা ১১ ও স্থানীয় টরি ৭।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ৪ হাজার ৭৬০ জন কৃষককে বিনামূল্যে সরিষা বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মুনসের আলী বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে ও রোগবালাই কম হলে স্বল্প খরচে সরিষা চাষে অধিক লাভ হয়। এক বিঘা সরিষা চাষ করতে খরচ হয় ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে বিঘায় ৫ থেকে ৬ মণ সরিষা উৎপাদন হয়। প্রতিমণ সরিষার বাজারমূল্য ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। অন্য ফসল চাষ করে প্রতি বিঘায় যে পরিমাণ লাভ হয় তার চেয়ে ওই পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করা যায়।
উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মধু সংগ্রহকারী মৌয়ালরা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক শতাধিক বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা এখন সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। মধু বিক্রি করার জন্য বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অনেক কোম্পানি অগ্রিম টাকা দিয়ে এই মধু ক্রয় করে থাকেন।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, মৌচাষিরা আসায় সরিষার ফলন প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। মৌমাছি শুধু মধুই সংগ্রহ করে না, ফসলের জন্য ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ মেরে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহয়তা করে থাকে। এ বছর সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি। তবে বৈরী আবহাওয়া না হলে ও সরিষার দাম ভালো থাকলে কৃষকরা লাভের মুখ দেখবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য