খুলনা জেলার পাইকগাছায় বাণিজ্যিকভাবে উন্নত জাতের পেয়ারা চাষ করে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন কৃষক তৌহিদুল ইসলাম। তিনি পেয়ার চাষ করে আর্থিকভাবেস্বাবলম্বী হয়েছেন। ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে পেয়ারা চাষ করে বছরে ১২ লাখ টাকার পেয়ারা বিক্রি হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।
তার পেয়ারা বাগানে গাছে গাছে ফুল ও ফলে ভরে আছে। তিনি উপজেলায় একজন সফল কৃষক ও আধুনিক কৃষি গ্রযুক্তি পলিনেট হাউজেরও উদ্যাক্তা । তার ২০ শতক জমিতে পলিনেট হাউজে চারাসহ উন্নত জাতের সবজি উৎপাদন করেছেন।
উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের হরিঢালি গ্রামের কৃষক তৌহিদুল বেশ কয়েক বছর ধরেই পেয়ারার চাষ শুরু করেছেন। তিনি প্রায় ১২ বিঘা জমিতে পেয়ারা, ড্রাগন, স্ট্রেবেরি, ঝাল, তরমুজসহ বিভিন্ন সবজি ফলের আবাদ করেছেন। তিনি প্রায় ৬ বিঘা জমিতে ২৪শত উন্নত জাতের পেয়ারা গাছ লাগিয়েছেন। এসব বাগানে নিয়মিত পরিচর্যা করছেন। একটি গাছ থেকে এক বছরে ৩ হাজার টাকার পেয়ার বিক্রি করতে পারে কৃষকরা। এ উন্নত জাতের গাছ থেকে কম খরচে ১২ মাসই পেয়ারা পাওয়া যায়। প্রতিটি পেয়ারা আধা কেজি থেকে প্রায় এক কেজি ওজন হয়। একটি গাছ টানা ৫ থেকে ৭ বছর ফল দেয়। আর এ পেয়ারা প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করা হয়। তার দেখাদেখি অনেক কৃষক ও বেকার যুবকরা এখন উন্নত জাতের পেয়ারা চাষ শুরু করছেন।
সফল উদ্যাক্তা কৃষক তৌহিদুল ইসলাম জানান, সাধারণ ফসলের চেয়ে পেয়ারার আবাদে ৩ গুণ লাভ হয়। চারা সংগ্রহ করে বৈশাখের শেষ সময় থেকে পেয়ারার চারা লাগানো শুরু হয়ে। উন্নত মিশরীয় জাতের পেয়ারার বাগান করেছেন। গাছ লাগানোর ৩ মাসের মাথায় ফল ধরতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে ১০০ থেকে ১৫০টি ফল ধরে। কিন্তু গাছের সুরক্ষায় ছোট থাকতে তা ফেলে দিয়ে ২০-২৫টি পেয়ারা রাখা হয় এবং গাছের ডোগা কেটে দিয়ে নতুন ডাল বের হয় তাতে অধিক কুড়ি বের হওয়ায় ফল বেশী পাওয়া যায়। ১২ মাস পেয়ারা ধরলেও শীত মৌসুমের পেয়ারায় দাম বেশি পাওয়া যায়। বর্ষাকালে পেয়ারার পোকা ও পচন রোধে সুষম সার প্রয়োগ করতে হয়।
এছাড়া পেয়ারার গায়ে পলিথিন পিপি জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে পেয়ারা পোকা মুক্ত থাকে এবং সার কিট নাশক ব্যবহার করলে ফলের উপর কোন প্রভাব পড়ে না।মাঝে মাঝে সেচ দেওয়া লাগে। পেয়ারা বাগানের মাঝে সাথি ফসল হিসাবে মালচিং করে ঝালের চাষ করেছেন। তার সাফাল্য দেখে অন্য ফসলের আবাদ ছেড়ে অনেক চাষি এখন উন্নত জাতের পেয়ারা চাষ শুরু করছেন।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ বলেন, পেয়ার চাষ একটি লাভজনক ফসল। কৃষক তৌহিদুল বিভিন্ন সবজি ও উন্নত জাতের ফল আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন। আমরা উপজেলার পেয়ারা চাষিদের জমিতে পরিদর্শন দিয়েছি ও প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। তাদের জমিতে কিভাবে তারা বিষযুক্ত রাখতে পলি বেঁধে পেয়ারা চাষ করতে পারে ও গাছের ভিতরে সাথী ফসল হিসেবে লেবু, মালটাসহ অন্যান্য ফসল আধুনিক পদ্ধতিতে উৎপাদন করতে পারে তার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য