-->
শিরোনাম

খালে বাঁধ দিয়ে মাটি ভরাট, সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
খালে বাঁধ দিয়ে মাটি ভরাট, সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক
বাঁধ দিয়ে খাল দখল করার অভিযোগ

বাঞ্ছারামপুরের ফরদাবাদ ইউনিয়নের কলাকান্দি গ্রামের একটি খালে বাঁধ দিয়ে মাটি ফেলে দখল করার অভিযোগ উঠেছে। ভরাট করার কারণে খাল সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে সেচ সংকটের আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষক।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরদাবাদ ইউনিয়নের নিজকান্দি গ্রামের তিতাস নদী থেকে একটি খাল উৎপন্ন হয়ে কলাকান্দি, তিলককান্দি, চর লোহনিয়া গাওরাটুলীতে আবার তিতাস নদীতে পতিত হয়েছে। এই খালের ওপর নির্ভর করে এলাকার প্রায় ৭০০ বিঘা বোরো ধান চাষ করা হয়। বর্ষার শুরুতেই এই খাল দিয়ে জমিতে পানি ঢোকে এবং বর্ষা শেষে খাল দিয়েই পানি বেরিয়ে নদীতে চলে যায়। কলাকান্দি গ্রামের পূর্বপাড়া মাদ্রাসার পাশে খাল দখল করে মুলিবাঁশের বেড়া দিয়ে মাটি ফেলেছেন শুকুর আলী ও মামুন মিয়া। খাল ভরাটের কারণে খাল সংকুচিত হয়ে গেছে। এতে বোরো সেচ মৌসুমে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করছেন কৃষক।

 

সরেজমিন দেখা গেছে, কলাকান্দি অংশে খালের দক্ষিণ ভাগে ১৫০ ফুটের মতো জায়গা দখল করে মুলিরবাঁশের বেড়া দিয়ে মাটি ফেলা হয়েছে। এতে খালটি সংকুচিত হয়ে গেছে। এই খালের ওপর নির্ভর করে এলাকার সাত শতাধিক কৃষক তাদের জমিতে বোরো ধান চাষ করেন। খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে এই খানে দক্ষিণ অংশের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে বোরো মৌসুমে সেচের পানির আশঙ্কা করছেন কৃষক।

 

চরলৌহনীয়া গ্রামের কৃষক শহীদ মিয়া জানান, কৃষি জমিতে সেচ সুবিধার জন্য দুই বছর আগে এই খাল খনন করা হয়েছে। এখন খালটি ভরাট করে ফেলায় দক্ষিণ অংশের জমিগুলোতে সেচের জন্য পর্যন্ত পানি আসবে না। এতে সময় মতো জমিতে সেচ দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

 

কলাকান্দি গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খালের যে অংশে বাঁধ দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এই অংশটির গভীরতা অনেক বেশি। শুষ্ক মৌসুমেও এই অংশে অনেক পানি থাকে। এই পানির ওপর নির্ভর করে জমিতে বোরো ধান চাষ করি আমরা। খাল ভরাট এবং সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় পর্যাপ্ত পানি পাব না বলে মনে হচ্ছে।’

 

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কলাকান্দি গ্রামের ব্লক ম্যানেজার দুলাল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি ছোটকাল থেকে এই খালের মধ্যে মাছ ধরে আসছি। এই খালের পানি দিয়েই এলাকার জমিতে সেচ দিয়ে আসছেন কৃষক। এখানে অনেকে মাছও চাষ করেন। এভাবে একটি খাল ভরাট করে ফেললে জমিতে সেচ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’

 

ফরদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মানিক মিয়া ভোরের আকাশকে জানান, খাল ভরাটের কথা শুনেছেন তিনি। কয়েকজন কৃষক তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এই খাল ভরাটের কারণে অনেক জমিতে সেচ কাজ ব্যাহত হবে।

 

সলিমাবাদ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, খালে বাঁধ দিয়ে মাটি ভরাট করার বিষয়টি শুনেছেন। উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ভালুকা উপজেলা সরকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান বলেন, ‘নায়েবকে সরেজমিন তদন্ত করে আমাকে জানাতে বলেছি। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version