-->

বন্ধুদের ধার দেয়া টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
বন্ধুদের ধার দেয়া টাকা তুলতে হালখাতার আয়োজন

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য হাল-খাতা। সারা বছর বেচা কেনার পর বছর শেষে বাকী টাকা তুলতে হাল খাতার আয়োজন করে থাকে ছোট-বড় ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এমনকি এই হালখাতায় এখন যুক্ত হয়েছে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে নদ-নদী ঘাট পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের হালখাতার চিঠি দিয়ে অনুষ্ঠানের দিন তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়।

 

এসব ছাড়িয়ে হাল খাতায় এবার যুক্ত হয়েছে ব্যক্তিগত ধারের বা হাওলাত দেয়া টাকা উত্তোলনে। হালখাতার মাধ্যমে ধারের টাকা তোলার এই নুতুন ধারণার সৃষ্টি করেছেন কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় এম.এ.এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল।

 

ইতিমধ্যে দেনাদারদের কাছে হাল খাতার চিঠি পৌছে দিয়েছেন তিনি। আগামী ১২ জানুয়ারী হালখাতার অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এরকম একটা চিঠি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই হালখাতা আয়োজনে তাকে নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

 

চিঠিতে তিনি দেনাদারদের নুতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এবং লিখেছেন আপনাদের টাকা হাওলাদ দিয়ে আমি আনন্দিত। আগামী ১২ জানুয়ারী হালখাতার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত হালখাতায় আপনি উপস্থিত হয়ে ঋণ পরিশোধ করে ঋণ মুক্ত থাকুন।

 

এই ঋণ পরিশোধের হালখাতায় ৩৫জন দেনাদারদের চিঠি দিয়েছেন ওই শিক্ষক। এসব মানুষের মাঝে বেশীর ভাগই ওই শিক্ষকের বন্ধু- বান্ধব, আত্বীয়- স্বজনসহ কাছের মানুষ।

 

চিঠি পাওয়া কয়েকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তি জানান, আমরা হালখাতার চিঠি পেয়ে প্রথমে হতভম্ব হলেও পরে বুঝতে পেরেছি ধারের টাকা ফেরত দিতে দেরী হয়েছে। আশা করছি হালখাতায় তার টাকা পরিশোধ করে দিব।

 

হালখাতার আয়োজক শিক্ষক আব্দুল আউয়াল জানান, তিন বছর যাবত বন্ধু বান্ধব ও নিকট স্বজনরা বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন। যাদের সাথে প্রতিদিন একসাথে উঠাবসা রয়েছে। লজ্জায় তাদের কাছে টাকা ফেরতও চাইতে পারিনা তারাও দেয়ার নাম করেনা। পরে তাদেরকে টাকা ফেরত দেয়ার মাধ্যম হিসেবে হালখাতার ধারণা মাথায় আসে। এতে তাদের সাথে মনোমালিন্যও হলোনা আবার টাকা উঠার সম্ভাবনা শতভাগ রয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, এ যাবত ৩৫জনকে চিঠি দিয়েছি। এদের মধ্যে কেউ তিন বছর আগে টাকা নিয়েছে। সব মিলিয়ে তার ৩লাখ টাকার মতো ধার দেয়া আছে। চিঠি পেয়ে অনেকে টাকা পরিশোধ করতে উদ্যোগী হয়েছেন।

 

আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের ৩ নং ওর্য়াডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. এরশাদুল হক ওই শিক্ষকের হালখাতার আয়োজনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি ওই শিক্ষককে চিনি। তার পাওনা টাকা উঠাতে তিনি হালখাতার আয়োজন করেছেন।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version