-->
শিরোনাম

বন্দর এলাকায় আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
বন্দর এলাকায় আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন জামে মসজিদ
পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদ

আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদ। এ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অসংখ্য নারী-পুরুষ। একই মসজিদে একই সময় নারী-পুরুষ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারছেন। এ মসজিদে নারী ও পুরুষ মুসল্লিদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা স্থান।

 

মসজিদে প্রায় দুই হাজার মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারবেন। মহিলাদের জন্য তিনতলায় পৃথক নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এ মসজিদটি নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একরামপুরের মাঠপাড়ার এলাকায় অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে।

 

মসজিদটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ড এলাকায় পড়েছে। আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি নির্মাণ করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। মসজিদটি গত ১৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কন্সফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর (১ ডিসেম্বর) শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়েই মুসল্লিদের জন্য মসজিদটি খুলে দেওয়া হয়। মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য প্রথম দিনেই নারী ও পুরুষ মুসল্লিদের ঢল নামে। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মসজিদটি। মসজিদ ছাপিয়ে আশপাশের সড়কেও ছড়িয়ে পড়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।

 

একরামপুুুুুুুুুুুুুুুুুুরের মাঠপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী নিজেও দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন। তার মতো একই এলাকার বাসিন্দা নাঈম ইসলাম আদনানসহ হাজারো মুসল্লি একই মসজিদে ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করেন। আধুনিক এ মসজিদের নানা বিষয়ে জানতে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মসজিদের মোয়াজ্জিন, বেশ কয়েকজন মুসল্লি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে। তারা জানালেন মসজিদের নানা আদ্যপান্ত।

 

সিটি করর্পোরেশনের সকল ওয়ার্ডে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি নগরের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদত বন্দেগি ও ইসলামের প্রচার, প্রসার ও উন্নয়নে এবং ইসলামের ভ্রাতৃত্ব ও মূল্যবোধসহ প্রকৃত মর্মবাণী প্রচার করার লক্ষ্যেই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করছেন। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এসব মসজিদে ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, আধুনিক টয়লেট, শিশু শিক্ষা, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে।

 

মসজিদ শুধু নামাজ আদায়ের জন্য নয়, ইসলাম ধর্মের মহান আদর্শ সমাজে ছড়িয়ে দিতে পারে। মানুষ যখন ইসলামের সঠিক জ্ঞান পাবে তখন কেউ আর মাদক, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত হবে না। যৌতুক ছাড়াও নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ হবে, মানুষ অন্যায় থেকে দূরে থাকবে। এক্ষেত্রে মসজিদগুলোর সঠিক ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

 

পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদটি ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলী আহাম্মদ চুনকা সড়ক সংলগ্ন কদমরসুল কলেজের পাশে অবস্থিত। এটি পাঁচতলা বিশিষ্ট মসজিদ। মসজিদের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন চার হাজার আটশ’ বর্গফুট। মসজিদটির মোট আয়তন একুশ হাজার ছয়শ’ বর্গফুট। এর আট কোটি ঊনসত্তর লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ১১ মার্চ। শেষ হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। পঞ্চম তলায় থাকছে আধুনিক ইসলামী পাঠাগার। যা এলাকার মানুষের ধর্মীয় জ্ঞান আহরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

 

ইব্রাহিম খলিল পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, প্রথম দিনেই নারী-পুরুষসহ আনুমানিক দেড় হাজার মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেছে। ঐদিন তিনশ’ থেকে চারশ’ নারী মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেন। পাক পাঞ্জাতন সিটি জামে মসজিদে নারী মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য আলাদা স্থান রয়েছে। বিশেষ করে নারীদের মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার গেটও আলাদা করা হয়েছে। মহিলাদের ওজুখানাও আলাদা ১ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী মসজিদ উন্মুক্ত হওয়ার প্রথম দিনই নারী মুসল্লিদের সঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করেছেন। তার সঙ্গে প্রায় তিনশ’ থেকে চারশ’ নারী মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করেন।

 

মুয়াজ্জিন ইব্রাহিম খলিল আরও বলেন, মসজিদটি পাঁচতলা বিশিষ্ট। এখন তিনতলা পর্যন্ত মসুল্লিরা নামাজ আদায় করতে পারছেন।

 

একরামপুরের মাঠপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী বলেন, মসজিদটি অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে ও সৌন্দর্যবর্ধনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। উন্মুক্ত হওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে মসজিদটি দেখতে ও নামাজ আদায় করতে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা আসেন। প্রথম দিন শুক্রবার মসজিদটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। পরে আশপাশের সড়কেও মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। জুমার নামাজ ছাড়াও বিভিন্ন ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেও মুসল্লিদের ভিড় পড়ে...।

 

একরামপুরের মাঠপাড়া এলাকার দোকানি নাঈম ইসলাম আদনান। বলেন, আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন মসজিদের নামাজ আদায় করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করেছি। তিনি উক্ত এলাকায় এমন একটি আধুনিকও দৃষ্টিনন্দন ও মসজিদ নির্মাণ করায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version