অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আদালতের নির্দেশ থাকলেও নরসিংদীর মনোহরদীতে দেদারসে চলছে ইট প্রস্তুতের কাজ। ঠেকানো যাচ্ছে না অবৈধ ইটভাটার পরিবেশ দূষণের মহোৎসব। সবুজেঘেরা মনোহরদীজুড়ে চলছে ৭টি অবৈধ ইটভাটা।
সূত্রে জানা যায়, মনোহরদী উপজেলায় ৩৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি ইটভাটার কোনোরকম বৈধতা ছাড়াই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। তিনটি ইটভাটার বন্ধ রয়েছে। বৈধ বেশিরভাগ ভাটারই জেলা প্রশাসনের অনুমোদন থাকলেও নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। অবৈধ ইটভাটাগুলো হলো, বড়চাপা ইউনিয়নের চন্ডিতলা গ্রামে অবস্থিত বিআরবি ব্রিকস, নামাপাড়া গ্রামে এমএসসি ব্রিকস, একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের বগাদী গ্রামে এলাহী ব্রিকস, কাচিকাটা ব্রিকস, গোতাশিয়া ইউনিয়নের চুলা গ্রামে মা ব্রিকস, দৌলতপুর ইউনিয়নের হরিনারায়ণপুর গ্রামে অবস্থিত আরএসএস এবং এএফটি ব্রিকস।
এসব ইটভাটা যেমন পরিবেশ দূষণ করছে তেমনিভাবে সাধারণ কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট করছে। এই ইটভাটাগুলো কয়েকটি দপ্তরকে ম্যানেজ করেই চলছে বলে দাবি ভাটা কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে বড়চাপা ইউনিয়নের নামাপাড়া গ্রামে অবস্থিত অবৈধ এমএসসি ব্রিকস, দৌলতপুর ইউনিয়নের হরিনারায়ণপুর গ্রামে অবস্থিত আরএসএস এবং এএফটি ব্রিকস, চালাকচর ইউনিয়নে কাঁচিকাটা ব্রিকস এ গিয়ে দেখা যায়, উৎসবের মত ইট তৈরির কাজ করছেন শ্রমিকরা। অবৈধভাবে কৃষকের জমির মাটি কেটে ভাটাগুলোতে পাহাড় সমান উচু করেছে। অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অনেক অদৃশ্য কারণেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে কেবিএম ইটভাটার মালিক মমতাজ উদ্দিন সরকার সুরুজ বলেন, এখনো আমাদের কাগজপত্র ঠিক করতে পারিনি। আপনার সঙ্গে দেখা করে কথা বলব।
বিআরবি ব্রিক ফিল্ডের মালিক শাহজাহান ভোরের আকাশকে বলেন, লাইসেন্স পেতে অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছি তবে এখনো পাইনি। বিভিন্ন দপ্তরে টাকা পয়সা দিয়ে ইটভাটা চালাতে হয়।
হরিনারায়ণপুর গ্রামের আরএসএস ব্রিকসের মালিক রমিজ উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ছেলে পরিচয়ে জানান, আমাদের ইটভাটার অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। এএফটি ব্রিকসের ম্যানেজার জনি জানান, আমাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র নেই তবে আবেদন জমা দেয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভাটার ম্যানেজার বলেন, যতদুর জানি ইটভাটা মালিক সমিতির হস্তেক্ষেপে অবৈধ ইটভাটাগুলো চালানোর জন্য প্রশাসন মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।
মনোহরদী উপজেলা ইটভাটা সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ফরিদ বলেন, আপনাদের সঙ্গে দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলব।
মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবা খান বলেন, আমি এই উপজেলায় নতুন এসেছি। আমি এ বিষয়ে এখনো তেমন অবগত নয়। অবৈধ ইটভাটা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। যাদের কাগজ নেই, বা যাদের কাগজ এক বছর ফেল তারাও অবৈধ। আমরা অভিযান পরিচালনা করব।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য