-->

৩ শ্রমিক-কর্মকর্তা মৃত্যুর ঘটনায় ২ কারখানা সাময়িক বন্ধ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
৩ শ্রমিক-কর্মকর্তা মৃত্যুর ঘটনায় ২ কারখানা সাময়িক বন্ধ

ময়মনসিংহের ভালুকায় জামিরদিয়া এসকিউ গ্রুপের বিরিকিনা এবং সেলসিয়াস কারখানায় শ্রমিক কর্মকর্তাসহ তিনজনের মৃত্যু এবং অর্ধশত শ্রমিক অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির দুটি কারখানা সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

 

রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আরিফুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর মধ্যে শনিবার রাতে এসকিউ গ্রুপের সেলসিয়াস কারখানা ও প্রতিষ্ঠানটির বিরিকিনা কারখানার উৎপাদন সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয় বলেও জানান তারা।

 

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আরিফুজ্জামান আরও জানান, এ ঘটনায় সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তদন্তে দেখা গেছে, কিছুদিন ধরে কারখানার ষষ্ঠ তলার শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও এগজস্ট ফ্যান বন্ধ রাখা এবং কারখানার পাশেই ইটিপি স্থাপন করার ফলে সেখান থেকে নির্গত ক্ষতিকারক গ্যাস (মিথেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফাইড, অ্যামোনিয়াম) ভেতরে প্রবেশ করে। বায়ু প্রবাহে ত্রুটি থাকার কারণে বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় অক্সিজেন স্বল্পতায় শ্বাসরোধ হয়ে শ্রমিক কর্মকর্তাসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

 

সেই সঙ্গে অসুস্থ শ্রমিক কর্মকর্তাদের দায়সারা চিকিৎসা এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টিও প্রতীয়মান হয়েছে। এই অবস্থায় তদন্ত প্রতিবেদনে এই প্রতিষ্ঠানটিকে ছয় দফা সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

এর মধ্যে কারখানার সব কর্মকক্ষে কার্যকর বায়ু প্রবাহে স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, কারখানার দেয়াল থেকে ইনলেট ফ্যান ও এসি অপসারণ করে যথাযথ স্থানে স্থাপন, পর্যাপ্ত ডাস্ট কারেক্টর ও এগজস্ট ফ্যান স্থাপন, পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ, যেকোনো দুর্ঘটনা যথা সময়ে সরকারি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা এবং বছরে দুইবার শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

 

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এসকিউ কারখানায় দুই দফায় প্রায় অর্ধশত শ্রমিক অসুস্থ হন। পরে শ্রমিক-কর্মকর্তাসহ তিনজন মৃত্যুবরণ করলে ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় কারখানা এবং প্রশাসনের ভেতরে-বাইরে। এদিকে এসকিউ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ঘটনাটি ধামাচাপার দেয়ার চেষ্টা করা এবং সাংবাদিকদের তথ্য না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

 

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও এসকিউ কর্তৃপক্ষের কারো নাম্বার পাওয়া যায়নি এবং বক্তব্যও জানা যায়নি।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version