সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনে ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুইটের পক্ষে কাজ করায় আওয়ামীলীগের চার নেতাকর্মীর নামে গরুর চুরির মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে আওয়ামীলীগ নেতারা (মামলার আসামীরা) অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারী) সকালে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পত্রে যাদের নাম এসেছে তদন্তে প্রমানীত না হলে তাদের নাম বাদ দেয়া হবে।
২০ জানুয়ারী তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল খালেকের সার ও কিটনাশক দোকানের ম্যানেজার রবিউল করিম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন, তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি, ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুস সাত্তার ভুট্র, তালম ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন আহমেদ ও আওয়ামীলীগ কর্মী মোজাফফর।
মামলার অভিযোগ পত্রে বাদী উল্লেখ করেছেন, মামলার ১নং আসামী আব্দুস সাত্তার ভুট্র একজন গরু ব্যবসায়ী। গত ১০ জানুয়ারী আব্দুস সাত্তার ভুট্র ও ২ নং আসামী লিটন আহমেদ আমার বাড়িতে (মামলার বাদী) আসে এবং আমাদের গরু বিক্রয় করার মতো কোন গরু না থাকার সত্ত্বেও গরুর দাম বলতে থাকে। প্রকৃত পক্ষে আসামীরা গরু ক্রয়-বিক্রয়ের নামে বাড়িতে এসে গরু রাখার জায়গা ও গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার রাস্তা চিহ্নত করে যায়।
১৩ জানুয়ারী সন্ধ্যায় আমার একটি লাল রংয়ের গাভী, একটি সাদা রংয়ের গাভী, দুটি সাদা বকনা বাছুর ও একটি কালো রংয়ের ষাঁড় বাছুর (যাহার মূল্য ৩ লাখ ১০ হাজার) বাড়ির বাইরে গোয়াল ঘরে রেখে দরজা বন্ধ করে বাড়ির ভিতরে যায়। রাতে খাবার খেয়ে পরিবারের সকলেই ঘুমিয়ে পড়ি। পরের দিন (১৪ জানুয়ারী) সকালে আমার স্ত্রী গোয়াল ঘরে থেকে গরু বের করতে গিয়ে দেখে গোয়াল ঘরের পিছনের দেয়াল ভাঙ্গা। ঘরে গরু নেই। আমার ধারনা উল্লেখিত আসামীরা আমার ৫টি গরু অজ্ঞাত নামা নসিমন/পিকআপ গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে গেছে।
এবিষয়ে তালম ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লিটন আহমেদ বলেন, গরুর চুরির ঘটনা মিথ্যা ও সাজানো। আমাদের যে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করা হয়েছে গত ৪ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন সুইটের পক্ষে কাজ করেছি। এজন্য নৌকার সমর্থক তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল খালেক তার দোকানের কর্মচারীকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছেন।
তালম ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় গত ৯ জানুয়ারী আমার উপর হামলার ঘটনা ঘটে। আমাকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। আমার উপর হামলার ঘটনায় আমার ছেলে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। আমার এই মামলার আসামীদের একজন মো: সজিব। তাকে গরু চুরির মামলায় ২ নাম্বার স্বাক্ষী করা হয়েছে। এতেই বোঝা যায় গরু চুরির মামলাটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র মূলক।
তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল খালেক বলেন, একজন গরু ব্যবসায়ী ও অন্য জনের কোন কর্মনাই। মামলায় সন্দেহ ভাজন হিসেবে তাদের নাম এসেছে। গরুর ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার কোন দ্বন্দ্ব থাকতে পারে না। তারা ঈগলের পক্ষে কাজ করেছে আমি নৌকার পক্ষে কাজ করেছি। সেটা যার যার ব্যক্তিগত ব্যপার।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য