-->
শিরোনাম

আজ থেকে শুরু হচ্ছে ডিসি পার্কে মাসব্যাপী ফুল উৎসব

অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দিন, সীতাকুণ্ড
আজ থেকে শুরু হচ্ছে ডিসি পার্কে মাসব্যাপী ফুল উৎসব
দৃষ্টিনন্দন ১২৭ প্রজাতির ফুলে ফুলে রঙিন ফৌজদারহাট ডিসি পার্কের সমগ্র এলাকা

সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট-বন্দর সংযোগ সড়ক সংলগ্ন বিশাল খাস জায়গা দখলমুক্ত করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে মনোরম ফুলের রাজ্য। গত বছরের ধারাবাহিকতায় ফৌজদারহাট ডিসি ফ্লাওয়ার পার্কে আজ বৃহস্পতিবার হতে ২৪ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী ফুল উৎসব। গত বছর এ উৎসবের স্থায়িত্ব ১০ দিনের হলেও এবার তার পরিধি বাড়িয়ে এক মাস ব্যাপি করা হয়েছে।

 

এ ফুল উৎসব উদ্বোধন করবেন মন্ত্রী পরিষদ সচীব মো. মাহবুব হোসেন।

 

এক সময় অবৈধ দখলদাররা সেখানে হোটেল রেস্তোরা ব্যবসার নামে গড়ে তুলেছিল মাদক আসক্তদের নিরাপদ আড্ডাখানা। ১৯৪ একরের বিশাল সরকারি খাস জায়গা দখল করে সেখানে গড়ে উঠেছিল শুকতারা নামের একটি অবৈধ হোটেল। যেখানে রাতে বসতো মাদকের রমরমা আড্ডা আর দিনে চলতো স্কুল-কলেজ পালানো শিক্ষার্থীদের অবাধ মেলামেশা। সর্ব সাধারণের জন্য উম্মুক্ত রঙিন ফুলের এ রাজ্যে এখন শোভা পাচ্ছে বর্ণিল ১২৭ জাতের ফুলে সাজানো দৃষ্টিনন্দন এক ফ্লাওয়ার পার্ক। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিপুল সরকারি অর্থ ব্যয়ে দুবাইয়ের মিরাকেল গার্ডেনের ডিজাইনে গড়ে উঠা “ডিসি ফ্লাওয়ার পার্কে” ২য় বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহত্তম ফ্লাওয়ার ফেস্টিভেল বা ফুল উৎসব।

 

১৯৪ একর খাস জমির ওপর গড়ে উঠা জায়গায় ইতোমধ্যে রোপণ করা হয়েছে ১২৭ প্রজাতির হাজার হাজার দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের ফুলগাছ। এক সময়ের অবৈধ স্থাপনা আর মাদকসেবীদের নিরাপদ আড্ডাখানার অভিশপ্ত জায়গায় এখন বাতাসে দোল খাচ্ছে বর্ণিল ফুলের রঙিন থোকা। পাখিদের কল-কাকলিতে মুখর এবং সাগর তীরবর্তী পার্কটির মুক্ত বাতাসে দোল খাওয়া রঙিন ফুলের শোভা দেখে নজর কাড়ছে আগত ভ্রমণপ্রেমীদের। এ ফ্লাওয়ার পার্কে বিকেলে এখন ভিড় করছে ভ্রমণপিপাসু হাজারো সাধারণ মানুষ।

 

রঙিন ফুলে সাজানো পার্কটিতে রয়েছে দেশি ফুলের পাশাপাশি অসংখ্য বিদেশি জাতের ফুলও। এ যেন ১২৭ প্রজাতির রঙিন ফুলের সুবাস ছড়ানো এক রাজ্য। এ ছাড়াও পার্কটিতে থাকবে শিশুদের জন্য কিডস জোন, চিত্রকর্ম প্রদর্শনী, ভায়োলিন-শো, ঘুড়ি উৎসব ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সু-ব্যবস্থা। পার্কটির সমগ্র এলাকা শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের চিত্ত বিনোদনের উদ্দেশ্যে সাজানো হয়েছে।

 

জেলা প্রশাসক‘সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, গত ১০ বছরের অধিক সময় ধরে ফৌজদারহাটের এ বিশাল সরকারি খাস জায়গার পুরো এলাকা অবেধ ভাবে দখল করে রেখেছিল একটি চক্র। এখানে প্রতিনিয়ত মাদকের আসর সহ অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ করে আসছিলো স্থানীয়রা। শেষ পর্যন্ত গত বছরের জানুয়ারী মাসেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মাধ্যমে ১৯৪ একর সরকারি জায়গা দখলক্তুক্ত ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এরপরই শুরু হয় দখলমুক্ত জায়গায় রঙিন ফুলের বাগান গড়ে তোলার বৃহত্তম সরকারি পরিকল্পনা।

 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘ফুল উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও অন্যান্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের মেধা ও মননের বিকাশ ঘটাতে পারে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ পার্কের সমগ্র এলাকা জুড়েই থাকবে ফুলের বাগান সহ ফুলকেন্দ্রিক নানান দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। আর পাশ্ববর্তী জোড়াদীঘিতেও থাকবে নৌকা ভ্রমণ সহ বিনোদনের নানা আয়োজন।'

 

এবারের ফুল উৎসবের সফলতায় জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম রফিকুল ইসলাম, উপজেলা সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আলা উদ্দিন।

 

আয়োজকরা জানান, দৃষ্টিনন্দন হাজারো রঙিন ফুলে সাজানো পার্কটিতে এখন সাজ সাজ রব। এবারের ফুল উৎসব দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষনীয় হয়ে উঠবে। গতবার আসা ফুলপ্রেমীরা অবশ্যই পার্থক্য লক্ষ্য করবে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version