ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে রাতের বেলায় শত শত বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। শীতকালে রাতের বেলা দিনের পরিবেশ সৃষ্টি করে ড্রাগন চাষের এমনই উদ্যোগ নিয়ে ভালো ফলন পেয়েছেন উপজেলার পায়রাডাঙ্গা গ্রামের চাষি বিপ্লব জাহান (রবিউল)। তিনি তার গ্রামে ১১ বিঘা জমিতে এ পদ্ধতিতে ড্রাগন চাষ করেছেন। তার সফলতা দেখে এখন অনেকেই এ পদ্ধতিতে ড্রাগন ফল চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাতে যখন শত শত বৈদ্যুতিক বাতি একসঙ্গে জ্বলে উঠে, দূর থেকে আলোর রোশনাই নজরে আসে। দেখে মনে হয় আকাশে তারা জ্বলছে। সে এক মনোরম দৃশ্য। রাতে এই দৃশ্য দেখতে অনেকেই ছুটে আসেন ড্রাগন বাগানে।
জানা যায়, দিনের দৈর্ঘ্য কমে গেলে শীতকালে ড্রাগনের ফুল ফল ধরে না। মার্চ মাসের শেষে ফুল ধরে। তাপমাত্রা বাড়লে ফল বড় হয়। জুন মাস থেকে বাজারে ড্রাগন ফল উঠতে শুরু করে। আর নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। কিন্তু শীতকালে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ফল ধরে না।
বাগান মালিক বিপ্লব জাহান বলেন, ২০২১ সালে ১১ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান তৈরি করেন। ২০২২ ও ২০২৩ সাল পর্যন্ত সাধারণ পদ্ধতিতে চাষ করে আসছেন। তার বড় ভাই আজাদ শীতকালে ড্রাগন ফল চাষের প্রযুক্তি সংগ্রহ করে তাকে দেন। সেপ্টেম্বর মাসে ড্রাগন খেতে লাইট বসানো শুরু করেন। চীন থেকে আনা ৩ হাজার ৩৩০টি লাইট খেতে সেট করেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ৩ ঘণ্টা ও সূর্যোদয়ের আগে আরো ৩ ঘণ্টা লাইটগুলো জ্বালান। খেত দিনের আলোর মতো হয়ে যায়। লাইটিংয়ের ফলে রাতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ও দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ে। এতে বাগানে বেশি পরিমাণ ফুল ও ফল ধরছে। বর্তমানে বাগান ফুল-ফলে ভরে গেছে। ফল উঠছে।
তিনি জানান, আগে তার বাগানে সিজনে মোট ৪৫ টন ফল উৎপাদন হতো। নতুন পদ্ধতিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি ফলন হবে। ফলের মানও ভালো হচ্ছে। গ্রীস্ম মৌসুমে ফলের দাম কম থাকে। গত মৌসুমে প্রতি কেজি ড্রাগন ৮০-২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে তার বাগানের ড্রাগন ৩৪০-৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আজগর আলি বলেন, রাতে লাইটিং করে শীতকালে ড্রাগন ফল উৎপাদনে সফল হয়েছেন বিপ্লব জাহান।
তিনি বলেন, ড্রাগন মূলত গ্রীষ্মকালীন ফল। এ সময় যে উৎপাদন হয় তার চেয়ে বেশি ফলন হয় লাইটিং পদ্ধতিতে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য