প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপহারের সেমিপাকা ঘর। সেই ঘরে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেশ সুখেই দিন পার করছেন ফাতেমা বেগম নামে এক নারী উদ্যোক্তা। ঘরের পাশে রয়েছে তার একটি চা-বিস্কুটের দোকান। নার্সারীর ব্যবসা করে তিনিও সংসারের হাল ধরেছেন।
ফাতেমা বেগমের স্বামীর নাম মো. রঞ্জু। তারা টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার পৌর শহরের শিয়ালকোল ফায়ার সার্ভিসস্থ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা।
পূর্বে অন্যের জায়গায় তারা বসবাস করতো। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের বারান্দায় ফাতেমা চাষ করেছেন ফলজ বৃক্ষ ও সবজি নার্সারী। ছোট এ নার্সারীতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ প্রজাতের চারা রয়েছে।
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ঘরের বারান্দা ও সামনের (উঠানের) কিছু অংশ ফাঁকা না রেখে চিন্তা করলাম এখানে ছোট পরিসরে একটি নার্সারী বাগান করা যায় কি না। পরে স্বামীর সহযোগীতায় নার্সারী করি। প্রথমে অল্প প্রজাতের চারা নিয়ে শুরু করি। বর্তমানে ২০-২৫ ধরণের চারা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন এসব চারা বিক্রি করে প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা আয় হয়। আগে অভাবের সংসার থাকলেও এখন স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলছি। সন্তানরা ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর ও জায়গা না পেলে ভাগ্য বদল হতো না। নার্সারী বড় করার জন্য সরকারের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করছি।’
ফাতেমা বেগমের স্বামী রঞ্জু বলেন, ‘ভূমি ও গৃহহীন থাকায় আগে হতাশায় ভুগছিলাম। পরে ঘরের জন্য আবেদন করলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বেলাল হোসেন স্যার ও পিইআইও মো. জহিরুল ইসলাম স্যার যাচাই-বাচাই করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ব্যবস্থা করে দেন। এই ঘর উপহার পেয়ে অনেক ভালো রয়েছি।’
সরেজমিনে উপজেলা পৌর শহরের শিয়ালকোলের ফায়ার সার্ভিসস্থ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘুরে দেখা গেছে, এখানে ১২ টি পরিবার বসবাস করছেন। এখান কেউ সেলুনের দোকান দিয়েছে, কেউ দর্জির কাজ করছেন, কেউ বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে। বসবাসরতরা পরিবার ও স্বজনদের নিয়ে সুখেই দিনপার করছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘পৌর শহরের শিয়ালকোল এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১২টি পরিবার বসবাস করছে। এরমধ্যে ফাতেমা নামে এক উপকারভোগী নারীকে নার্সারী বাগান করতে উৎসাহ প্রদান করলে তিনি নার্সারী করেন। এসব বিক্রি করে এই নারী উদ্যোক্তা বেশ স্বাবলম্বী হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ফাতেমাকেই নয়, তারমধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বসবাসরত এখানকার কয়েকজনকে মুদি দোকান, সেলুন দোকান, ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আরেক নারীকে সেলাই মেশিন প্রদান করা হয়। এসব বাসিন্দারা এখন সুন্দরভাবে পরিবার নিয়ে দিনপার করছে। ফলে তাদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে ইউএনও মো. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে গৃহ ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় সেমিপাকা ঘর উপহার হিসেবে প্রদান করে সরকার। যে নারী উদ্যোক্তা হয়ে নার্সারী করেছে তা প্রশংসনীয়। আশ্রয়ণে যারা বসবাস করছে তাদের স্বাবলম্বী করার জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য