মো. শহিদুল ইসলাম শাহিন। পেশায় তিনি একটি প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক। জানা গেছে, তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি একজন সফল কৃষকও। রবি মৌশুম এলেই তিনি চিন্তা করেন বিরল জাতীয় কিছু চাষাবাদ করার। এ বছর তিনি ২ হাজার রঙ্গিন ফুল কপি চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
তার জমিতে হলুদ বেগুনি রংয়ের ফুলকপি দেখতে প্রতিদিনই মানুষ আসছেন। রং বেরংয়ের ফুলকপি চাষ করে অনেক টাকা লাভবান হবেন বলে আশাবাদী কৃষক সহিদুল ইসলাম শাহিন।
ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদা ইউনিয়নের আদর্শপাড়া গ্রামের সহিদুল ইসলাম শাহিন। তিনি তার ১৭ শতক জমিতে এই প্রথম আবাদ করেছেন হলুদ আর বেগুনী রংয়ের ফুলকপি। ফলন আসা পর্যন্ত খরচ হয়েছে তার মাত্র ১০ হাজার টাকা। চারা রোপনের ৭৫ দিনের মাথায় বিক্রির উপযোগী হয়ে উঠেছে রঙ্গিন এ ফুলকপি। এ কৃষক এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার টাকার ফুলকপি বিক্রি করেছেন। যে পরিমাণ ফুলকপি জমিতে রয়েছে সেগুলো বিক্রি করে পারবে প্রায় ১ লাখ টাকার মত।
সহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে তার আয় হবে কমপক্ষে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। এই কপি চাষে রাসায়নিক সার ও ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার না করায় এটা সম্পূর্ণ নিরাপদ। এলাকাতে নতুন ফসল হওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই এটার চাহিদা অনেক বেশি। এ ফুলকপিগুলো তার জমি থেকেই বেশির ভাগ বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাজারগুলোতে বিক্রি করেও পাশ্ববর্তী বিভিন্ন উপজেলার হাট বাজারেও বিক্রি করছেন।
তিনি বলেন, আগামীতে এখানকার অনেক কৃষক অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বাহারী রংয়ের রঙের ফুলকপি চাষ করবেন বলে ইচ্ছা পোষন করছেন। রঙ্গিন ফুল কপির বীজ পাওয়াটা সহজলভ্য হলে আগামীতে এর চাষাবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে।
রঙ্গিন কপি চাষাবাদে লাভবান হওয়ায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন এখানকার কৃষকেরা বলে জানিয়েছেন কৃষি অফিসার।
ভৈরব উপজেলা কৃষি অফিসার আকলিমা বেগম বলেন, সহিদুল ইসলাম শাহিন একজন শিক্ষক হয়েও তার নিজের জমিতে সব সময় উন্নত জাতের কিছু একটা সবজি চাষ করে থাকেন। গত বছর এ জমিতেই তিনি ক্যাপসিকাম চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এ বছরও তিনি প্রথমবারের মত আবাদ করেছেন হলুদ আর বেগুনী রংয়ের ফুলকপি। অন্যান্য ফুলকপির তুলনায় এগুলো কালারফুল হওয়াতে মানুষের কাছে এটা খুব আকর্ষনীয় এবং বাজারে এর চাহিদাও খুব বেশি। এ ফুলকপি পুষ্টিগুণ মানসম্মত হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ফুলকপি চাষাবাদে খুবই আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আমরা আশা করছি আগামী রবি মৌশুমে এর আবাদ আরো বৃদ্ধি পাবে। হলুদ ও বেগুনী রংয়ের এ ফুলকপিতে ভিটামিন আর ফলিক এসিড থাকার কারণে এন্টি অক্সিজেনেরও কাজ করে শরীরে।
কৃষকদের জন্য দুষ্প্রাপ্য রঙ্গিন ফুল কপির বীজগুলো যদি কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রণোদনা দেয়া হয় তাহলে এ অঞ্চলে রঙ্গিন কপির চাষাবাদে কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়বে। মিটবে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা। এমনটাই মনে করছেন স্থানীয়রা।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য