কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর-পাকুন্দিয়া-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কের কাওনা এলাকায় নরসুন্ধা নদের উপর নির্মাণাধীন গার্ডার সেতুর কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। এতে চরম ভোগান্তির শিকার দুই উপজেলার মানুষ।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ ৪ বছরেও কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লক্ষাধিক মানুষকে।
স্থানীয় জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই কাদা মাটিতে গাড়ি পিছলিয়ে নদে পড়ে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশের চুক্তির বর্ণনা ও সেতুর কাজ চলমান এমন সর্তকমূলক সাইনবোর্ড না টানিয়েই দীর্ঘদিন ধরে কাজ ফেলে রাখায় জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেতুর দু’দিকের রেলিং ও সংযোগ সড়কের কাজ ফেলে রাখায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় চর কাওনা এলাকার আব্দুল কাদির, মো. মফিজ উদ্দিন, সৃজন মিয়া ও স্থানীয় সাংবাদিক রফিকুল ইসলামসহ অন্তত ২০ জনের সাথে। এসময় সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ব্রীজ হলো আমাদের গলার ফাঁস। ব্রীজের কাজ করার সময়ে দু’পাশে কোন সর্তকমূলক সাইন বোর্ড না থাকায় ইতিমধ্যে সংযোগ সড়কের গর্তে পড়ে দুর্ঘটনায় দু’জন লোক মারা গেছেন।
এছাড়া প্রায়ই এখানে ডাইভারসনে পণ্যবাহী কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য গাড়ী উল্টে অনেকেই আহত হয়েছেন। বিকল্প রাস্তাটি ভাঙ্গা থাকায় বড় সমস্যায় পড়েছে দুই উপজেলার মানুষ। তারাকান্দি বাজারের সবজিবাহী গাড়ী প্রায়ই উল্টে যায়, অনেক গাড়ীর বাম্পার ভেংগে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কয়েকজন মিলে টেনে অটো রিকশা উপরে উঠাতে হয়। শুকনা মৌসুমে ধুলা-বালিতে নাক-মুখ বন্ধ হয়ে যায়। আর বৃষ্টি হলে গাড়ি পিছলে উল্টে যায়।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৩৭৮০ মি. চেইনেজে ৪০ মিটার দৈর্ঘের পিসি গার্ডার ব্রীজের নির্মাণ কাজের জন্য ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারীতে কুমিল্লার এইচ/এন-৪৬৪, পুনাম পেলস, এইচটিবিএল সার্চ (জেবেকা) এর সাথে প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কের নরসুন্ধা নদের উপর কাওনা এলাকায় ব্রীজটি নির্মাণের চুক্তি হয়। এতে সাব-কন্টাক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয় কিশোরগঞ্জ জেলার এস আলম। যা সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিলো ২০২২ সালের ৩০ মে এর মধ্যে। কিন্তু সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে বার বার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নানা অজুহাতে সেতুর কাজ সমাপ্ত করেনি।
হোসেনপুর উপজেলা প্রকৌশলী গালীব মুরশীদ জন দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, কয়েক দফা কাজের মেয়াদ বাড়ানো হলেও এখনো কাজ শেষ না হওয়ায় তারা বিপাকে রয়েছেন। এ পর্যন্ত সেতুর ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়কের কাজ বাকি রয়েছে। এ সব অনিয়মের জন্য ঠিকাদারকে কাজ বাতিল করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
হোসেনপুর ইউএনও অনিন্দ্য মন্ডল বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে যদি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ না করে তাহলে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজ বাতিল করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য