-->
শিরোনাম

মহাসড়কে সবজির হাট, দুর্ঘটনার শঙ্কা

যশোর প্রতিনিধি
মহাসড়কে সবজির হাট, দুর্ঘটনার শঙ্কা
মহাসড়কের ওপর ও দুইপাশে সবজির হাট বসানো হয়েছে

যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ও সাতমাইল বাজারে মহাসড়কের ওপর ও দুইপাশে সবজির হাট বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাট ইজারাদাররা অতিরিক্ত টোল আদায়ের জন্য অবৈধভাবে প্রতিদিন ভোর থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত সেখানে হাট বসিয়ে থাকে। এতে সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

 

সড়কের ওপর হাট বসানোর কারণে বিগত দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। যশোরের জেলা প্রশাসক বলেছেন, মহাসড়কের ওপর ও পাশে হাট বসানোর কোন নিয়ম নেই।

এলাকাবাসী জানান, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। প্রতিদিন এই মহাসড়কে অসংখ্য বাস, ট্রাক, পিকআপসহ নানা ধরণের যানবাহন চলাচল করে। ফলে সব সময় যানবাহনের চাপ লেগেই থাকে। অথচ ব্যস্ততম এই মহাসড়কের চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের চুড়ামনকাটি ও হৈবতপুর ইউনিয়নের বারীনগর সাতমাইলে মহাসড়কের সবজির হাট বসানো হচ্ছে। মহাসড়কে ওপর হাট বসানোর কারণে ওই এলাকার সড়ক ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।

গোলাম রসুল, হাসান আলী ও জোবায়ের হোসেন জানান, চুড়ামনকাটি ও সাতমাইলে দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের ওপর সবজির হাট বসানো হচ্ছে। সবজি বোঝাই ভ্যান, ভটভটি, থেকেই চলছে কেনাবেচা। আবার সড়কের ওপর ও দুইপাশে বস্তা ডালিতে সবজি নিয়ে বসেন চাষিরা। ফলে সড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে।

তারা আরো জানান, চুড়ামনকাটি বাজার সংলগ্ন একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি আলিম মাদ্রাসা রয়েছে। এছাড়া সাতমাইল বাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি কলেজ ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। সড়কের ওপর বসা সবজি হাট পাড়ি দিয়েই তাদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে হয়। ফলে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে শিক্ষার্থীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সবজি বিক্রি করতে আসা কয়েকজন জানান, ইজারাদারদের বাড়তি টোল দিয়ে মহাসড়কের পাশের হাটে বসতে হয়। তাছাড়া এখানে বেচাকেনাও হয় ভালো। তাই সবজি হাটে দোকান বসানোর চেয়ে এখানে ডাবল টোল আদায় করে ইজারাদাররা।

পথচারীরা জানিয়েছেন, মহাসড়কে হাট বসার কারণে মানুষের চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই। কারণ হাটের কারণে সড়কে যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু ইজারাদাররা প্রভাব খাটিয়ে মহাসড়কে হাট বসিয়ে লাখ লাখ টাকা লুফে নিচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কে হাট বসানোর কারণে বিগত দিনে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে একজন হলেন নির্মাণ শ্রমিক নাসির উদ্দিন (৩৫)। তিনি চুড়ামনকাটি বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কের ওপর থেকে অবৈধ হাট উচ্ছেদ করা না হলে দুর্ঘটনায় আরো প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

চুড়ামনকাটির হাট মালিক কমিটির সাবেক সদস্য আলতাফ হোসেন জানান, পাইকার হাটের নির্ধারিত জায়গা না থাকার কারণে কৃষকের স্বার্থে মহাসড়কের ওপর বা পাশে হাট বসানো হয়। কৃষকরা নিজেদের মতো এসে সবজি বহনকারী পরিবহন ও দোকান নিয়ে বসে।

সাতমাইল হাটের ইজারাদার হৈবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক জানান, জন্মের পর থেকে সাতমাইলে মহাসড়কের ওপর সবজির হাট দেখে আসছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিকল্প জায়গা নির্ধারণ করে দিলে সেখানে হাট বসানো হবে।

যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার জানান, মহাসড়কে ওপর ও দুই পাশে হাট বসানোর কোন নিয়ম নেই। চুড়ামনকাটি ও সাতমাইল বাজারে এই রকম কিছু করা হলে সেটা অবশ্যই অবৈধ। বিষয়টি তার জানা ছিলো না। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version