কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় শুরু হয়েছে আট দিনব্যাপী অমর একুশে বইমেলা। শনিবার সন্ধায় ভৈরব বাজারে রাজকাচারি মাঠে মেলা উদ্বোধন করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি লেখক গোলাম কুদ্দুছ।
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কথাসাহিত্যিক ড. আকিমুন রহমান, বইমেলার উপদেষ্টা অধ্যক্ষ শরিফ উদ্দিন আহমেদ, এস এম বাকী বিল্লাহ ও আতিক আহমেদ সৌরভ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, ভৈরব বইমেলা পরিষদের সভাপতি সাগর রহমান।
ভৈরব বইমেলা পরিষদ একুশে বইমেলার আয়োজক। আয়োজক কমিটি সদস্যদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবারের মেলাটি ২৭তম একুশে বইমেলা। একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভাষা শহীদ ও মাতৃভাষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার ভাবনা থেকে ২৭ বছর আগে ভৈরবে ঘটা করে বইমেলা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে মুদ্রিত বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা মেলা আয়োজনে অন্যতম ভাবনা।
সর্বশেষ ছয় বছর ধরে মেলায় গড়ে ১২ লাখ টাকার বই বিক্রি হচ্ছে। মেলাটিকে ঘিরে প্রতিবছর স্থানীয় লেখকদের একাধিক বই বের হয়। সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের লোকজনের মধ্যে কাজের আনন্দ বয়ে আনে। এক শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার হয়। সব মিলিয়ে ভৈরবসহ আশপাশের এলাকায় মেলার ইতিবাচক প্রভাব এখন স্পষ্ট।
২৪ ফেব্রুয়ারি হবে সমাপনী আয়োজন। ওই দিন প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন অভিনেত্রী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব দিলারা জামান। রোববার মেলার মাঠে বিভিন্ন স্টলে গিয়ে দেখা যায়, স্টল বরাদ্দপ্রাপ্তরা তাদের স্টলে অনেক রকম বই সাজানোর রয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও বইমেলায় স্টলে বই বিক্রির জন্য ভাল সাড়া পাবেন বলে জানায় স্টল বরাদ্দকৃতরা। তারা জানান, পাঠকের হাতে ভালো বই তুলে দেওয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করে আনা হয়েছে।
পাঁচ বন্ধু মিলে মেলায় দিচ্ছেন একটি স্টল। গত বছরের মেলায়ও স্টল দিয়ে সাফল্য পেয়েছিলেন তারা। তাদের একজন অমিয়। তিনি বলেন, ‘এখন বইয়ের দাম অনেক। নামিদামি লেখক হলে তো দাম আরও বেড়ে যায়। খেয়াল করেছি, অনেকে বই পছন্দ করে। শেষে বেশি দামের কারণে আবার রেখে যায়। বইয়ের দাম নাগালের মধ্যে থাকলে মুদ্রিত বইয়ের পাঠক আরও বাড়ত।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভৈরব বইমেলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুল হক মেলার ইতিবাচক দিক তুলে ধরে বলেন, দুই যুগের অধিক সময় ধরে এ একুশে বইমেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ, লেখক-পাঠক সৃষ্টি ও জ্ঞানচর্চায় ভৈরবে আস্থার জায়গা তৈরি করতে পেরেছে।
তিনি বলেন, এবারের মেলায় ২০টি স্টল থাকছে। প্রতিদিন সাহিত্য সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, গ্রন্থ আলোচনা, নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচকসহ মেলার মঞ্চে নাটক মঞ্চস্থ হবে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য