-->
শিরোনাম

মেঘনার পাড়ে দুই ঘণ্টার হাট, লাখ টাকার বাণিজ্য

কুমিল্লা প্রতিনিধি
মেঘনার পাড়ে দুই ঘণ্টার হাট, লাখ টাকার বাণিজ্য
হাইমচর উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ে বসে দুই ঘণ্টার বাজার

ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার তেলির মোড় লঞ্চঘাট মেঘনা নদীর পাড়ে বসে দুই ঘণ্টার বাজার। শীত মৌসুমে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৮টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার এ হাট কৃষক ও ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে মুখর থাকে। হাটে এ দু’ঘণ্টার মধ্যেই চরাঞ্চল থেকে আসা শাক-সবজি, মাছ, হাঁস ও মুরগিসহ নানা ধরনের কৃষিপণ্য বিক্রি হয়ে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে কয়েক লাখ টাকার লেনদেন হয় এ হাটে। চরাঞ্চলের মানুষের জীবন সংগ্রামের একটি অর্থনৈতিক বড় মাধ্যম এটি।

ভোর থেকেই মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় চাঁদপুরের হাইমচরের নীল কমল ইউনিয়নের মাঝের চর, ইশানবালাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি চর থেকে ছুটে আসে একের পর এক ট্রলার। ওই ট্রলারে করে চরের কৃষকরা হাটে আসেন, বিক্রি শেষে আবার চলে যান চরাঞ্চলে।

কৃষক নেছার আহমেদ ও কাজী চকিদার জানান, চরে চাষকৃত পেঁয়াজ, রসুন, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া, শশা, শাক-সবজি, মাছ, হাঁস ও মুরগিসহ নানা ধরনের কৃষিপণ্য চাষাবাদ হয়ে থাকে। আর এসব সবজি কেনার জন্য এপারে অপেক্ষমান থাকেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ী নোয়াব মোল্লা ও খলিল হোসেন বলেন, সারাবছর এই স্থানে হাটটি জমজমাট থাকে। এখানে কৃষকদের কাছ থেকে সবজি কিনে গ্রামের বিভিন্ন বাজারে আমরা বিক্রি করে থাকি। প্রতিদিন কয়েক (৩-৪) লাখ টাকার বাণিজ্য হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ক্রেতা আফজাল ও তৈয়ব মিজি জানান, আগে কৃষিপণ্য নিয়ে বিপাকে থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে চরে উৎপাদিত কৃষিপণ্য মেঘনার পাড়ে এনে বিক্রি করছেন কৃষকরা। প্রতিদিন হাইমচরের মানুষসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ক্রেতারা এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। এখানে একদম তরতাজা শাকসবজি পাওয়া যায়, আর দামও কম। দুই ঘণ্টার মধ্যে এই হাট শেষ হয়ে যায়। কেউ আসলে সকাল ৭টার মধ্যে আসতে হবে।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. সাফায়েত আহম্মেদ সিদ্দিকী বলেন, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক চর রয়েছে। হাইমচরের চরগুলোর কৃষকেরা আগের তুলনায় অনেক স্বাবলম্বী। তারা স্থানীয় পর্যায়ে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য চরের চাহিদা মিটিয়ে জেলাসহ বিভিন্ন উপজেলায় বিক্রি করছেন। প্রতিবছরই চরের কৃষকদের জন্য বাড়তি প্রণোদনার ব্যবস্থা রাখা হয়।

তিনি আরও বলেন, আমাদের চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অনেক চর আছে। বিশেষ করে হাইমচরের মেঘনায় কিছু চর আছে। এখানে কৃষকরা আগের তুলনায় অনেক স্বাবলম্বী হয়েছেন। তারা পরিকল্পিকভাবে চাষাবাদ করছেন। বাদাম, সরিষা, পেঁয়াজ, মিষ্টি কুমড়া, আলুসহ অন্যান্য শাক-সবজি চাষাবাদ করছেন।

 

বিশেষ করে তারা পরিকল্পিত চাষাবাদ করে যে সফলতা পেয়েছেন, তাতে স্থানীয়ভাবে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলায় ও জেলায় সবজি সরবরাহ করছেন। চরাঞ্চলে বিশেষ করে কৃষকরা যাতে আর্থিক সহায়তা, বীজ, সার সহায়তা পেতে পারেন, সেক্ষেত্রে প্রতিবারই কৃষকদের প্রণোদনা এলে চরের কৃষকদের জন্য বাড়তি প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করে আসছি।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version