-->
শিরোনাম

হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে চুরির সংখ্যা

দুমাসে শতাধিক চোর আটক

ময়মনসিংহ ব্যুরো
হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে চুরির সংখ্যা
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের পাশে চারপাড়া এলাকায় অবস্থিত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। এটি দেশের অন্যতম সরকারী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নামে পরিচিত। ময়মনসিংহ বিভাগীয় চারটি জেলা ছাড়াও পাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন রোগী ও স্বজনরা। এতে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর সঠিক তদারকি না থাকায় হাসপাতালটি এখন চোরের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে বলে জানান ভর্তি হওয়া রোগীসহ তার স্বজনরা।

সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা লোকজন ঠেকাতে পারছেন না প্রতিদিনের চুরির ঘটনা। প্রকাশ্যে দিনে-রাতে চুরি হচ্ছে রোগীর স্বজনদের দামি মোবাইল আর নগদ টাকা। গত ১ মাসে ২ শতাধিক মোবাইল ও প্রায় লক্ষাধিক টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, রোগীদের স্বজন সেজে হাসপাতালে প্রবেশ করে সর্বশান্ত করে দিয়ে যায় চোরের এই চক্রটি। চক্রটির সাথে হাসপাতালের ঝাড়ুদার, আয়া এবং সিকিউরিটি গার্ডদের সম্পৃক্ততা আছে কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।

ফুলপুর উপজেলার পৌর শহরের বাসিন্দা শ্রাবণী সরকার। তিনি কয়েক দিন আগে লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার বড় ভাই বাপ্পি বোনকে দেখতে এসে রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন হাসপাতালের মেঝেতে। সকালে উঠে দেখেন তার ব্যবহৃত ২০ হাজার টাকা দামের মোবাইলটি আর নেই। ব্যবহৃত নম্বরে কল করলে ফোন রিসিভ করে ওপাশ থেকে একজন বলেন, ‘এক হাজার টাকা পাঠিয়ে দিলেই মোবাইল ফোনটি ফেরত পাবেন।’ কোন উপায়ান্ত না পেয়ে বিশ্বাস করে চোরের দেওয়া নম্বরে ১ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয় বাপ্পি। কিছুক্ষণ পরে দুটি নম্বরই বন্ধ করে দেয় চোর। এরপর থেকে আর কোন যোগাযোগ করা যায়নি। পরদিন দুপুর ১২ টায় শ্রাবণীর মোবাইলটিও চুরি হয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা চুরি হয়ে গেছে। এ নিয়ে থানায় পৃথক কয়েকটি হারানো জিডি করা হয়েছে বলে জানান তারা।

ত্রিশালের বালিপাড়া আব্দুল কাইয়ুম নামের এক লোক জানান, তার মাকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে টাকা ও মোবাইল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় চোরাকে হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

শনিবার বিকালে জরুরী বিভাগের সামনে সুফিয়া নামের এক নারী রোগীর মোবাইল ও টাকা চুরি যাওয়ায় মাটিতে পড়ে চিৎকার করছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্প এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত দুমাসে প্রায় শতাধিক চোরকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। চুরির ঘটনা প্রতিদিনই ঘটছে বলেও তিনি জানান। তবে তারা হাসপাতালের ভর্তি হওয়া রোগী ও স্বজনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন।

মমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফেরদৌস বলেন, হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে। রোগীর পাশাপাশি স্বজনদের উপচে পড়া ভিড় সব সময় লেগেই থাকে। চোর চক্রের সদস্যরা রোগীদের স্বজন সেজে হাসপাতালে ঢুকে চুরি করে। রোগী ও স্বজনরা যদি তাদের নিজেদের মালামাল নিজ দায়িত্বে রক্ষণাবেক্ষণ করতো তাহলে চুরির ঘটনা ঘটতো না। হাসপাতালে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা কাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু চোর সদস্যকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করা হয়েছে। হাসপাতালে চুরি বন্ধে আমাদের কঠিন ভূমিকা রয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version