ডিভোর্স দেওয়ার পরও পুলিশ কনস্টেবল মরহুম আতাউর রহমানকে স্বামী দাবি করায় স্ত্রী রিফাত সুলতানা এতিম সন্তানদের নিয়ে ডিভোর্সি নারী মিতু বেগমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাব নিমতলায় স্ত্রী রিফাত সুলতানা ও তার দুই সন্তান এবং শ্বশুরকে সাথে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন। রিফাত সুলতানা দিনাজপুর পৌর এলাকার নিমনগর শেখপুরা (শেখ জাহাঙ্গির মাজার শরীফ রোড) সংলগ্ন কনস্টেবল/৭৭৯ আতাউর রহমানের স্ত্রী ।
লিখিত বক্তব্যে স্ত্রী রিফাত সুলতানা জানান, গত ২৪ বছর পূর্বে আমাদের দুই পরিবারের সম্মতিতেই পারিবারিকভাবে আমাদের বিয়ে হয় । বর্তমানে আমি দুই সন্তানের জননী । আমার বড় ছেলে নবম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত ছোট মেয়ের দেড় বছর। এই অবস্থায় হঠাৎ করেই আমার স্বামী আতাউর রহমান ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে কর্মরত অবস্থায় বদলি জনিত কারণে নিজ বাসা দিনাজপুরে আসার পর হঠাৎ স্টক করে গত ৬ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মারা যান।
আমার স্বামী মারা যাওয়া পর ঢাকা মিরপুর - ১২১৬ মধ্য পাইকপাড়া ও গবেষণাগার মহল্লার বোধই শেখের বিবাহিত কন্যা মিতু বেগম আমার স্বামী আতাউর রহমানকে স্বামী দাবি করে ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইনে আবেদন করে। জানার পর হতভম্ভ হয়ে যাই ।
আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় কোন অবস্থাতেই আমাদের সামনে বা আমার শ্বশুর বাড়িতেও তার দ্বিতীয় সংসার রয়েছে এমন কোন কথা বলে যান নাই। আমার স্বামীর রেখে যাওয়া তার ব্যক্তিগত পুলিশ ট্যাংক (বক্স) ভেঙ্গে দেখা যায় । মিতু বেগম নামে এক মহিলার সাথে তার ডির্ভোসের কাগজপত্রসহ স্ট্যাম্পে মিতু বেগমের স্বাক্ষরসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়া যায় । মিতু বেগমের সাথে তার ডিভোর্স হওয়ার পর তাকে দুই দফায় দেনমোহর বাবদ ও ভরণ পোষণের খরচ সহ ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন এবং মিতু বেগমের সাথে ৩ শত টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প একটি স্থানীয় আপোশ মীমাংসার সম্পূর্ণ করার কাগজও পাওয়া যায়।
আমার স্বামী আতাউর রহমান ডিআইজি রংপুর রেঞ্জ কার্যালয়ের আদেশ ৬৮৬, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩ বদলি হওয়ায় বদলি স্থানে যোগদানের নিমিত্তে সিসি গ্রহণ করিয়া নিজ বাড়ি দিনাজপুরে আসে এবং মিতু বেগম তার সঙ্গবদ্ধ চক্রের দ্বারা মানসিক চাপের পরিস্থিতি ও প্রকোপের পারিপার্শ্বিক চাপ সৃষ্টি করার কারণে আমার স্বামী আতাউর রহমান গত ৬ অক্টোবর ২০২৩ মৃত্যু বরণ করেন।
মিতু বেগম অন্যায় ভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে আদায়কৃত টাকা পরিশোধ করার সময় ঋণের মধ্যে জর্জরিত হন স্বামীর রেখে যাওয়া ঋণের টাকা পরিশোধ করার জন্য আমি সন্তানদের ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া ও ভরণ পোষণ প্রদান করতে পারছি না। আমি ও আমার সন্তানদের নিয়ে অনাহারে ও অর্ধাহারে থাকা অবস্থায় শত কষ্টের মধ্যে সন্তানদের বুকে নিয়ে জীবন যাপন করছি।
এদিকে আমার স্বামী মৃত্যুবরণ করার পর আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী অফিসার দিনাজপুর কোতয়ালী থানা ও বালুবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি আমার স্বামীর পরিবারের সদস্য সংখ্যা স্বরে জমিন যাচাই-বাছাই প্রতিবেদন ও আমার এক পুত্র ও কন্যা এবং আমার স্বামীর পিতা ও মাতার নাম উল্লেখপূর্বক দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা স্মারক নাম্বার ১৯৫ । ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ এবং বালুবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ি পৃথক দুটি প্রতিবেদন প্রেরণ করেন।
অর্থলোভী মিতু বেগম পুনরায় আমার অবুঝ পিতৃহারা সন্তানদের বাবার রেখে যাওয়া পেনশন ও রেশন বঞ্চিত করার জন্য ঠাকুরগাঁও পুলিশ লাইন কনস্টেবল হারুন রিজার্ভ অফিস এর সহযোগিতায় আমার স্বামীর পেনশন ও রেশন এর জন্য আবেদন করে । যা সে কোনোভাবেই দাবি করতে পারেনা। আমার স্বামীর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই, স্বামীর জীবদ্দশায় তাকে তার সমস্ত পাওনা পরিশোধ করে দিয়ে গিয়াছেন। কনস্টেবল হারুনের সহযোগিতায় মিতু বেগম আমাকে ও আমার অবুঝ দুই শিশু সন্তানকে হয়রানি করছে । আমি একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সন্তান তাই এই অর্থালোভী প্রতারক মিতু বেগমকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করছি।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য